ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নারায়ণগঞ্জে বন্ধন পরিবহন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ

জেলা প্রতিনিধি | নারায়ণগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৭:৪৫ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকৃত বন্ধন পরিবহনের দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়ছে। এঘটনায় আটজনকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকার কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় আট থেকে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম জানা পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, বিগত সময়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বন্ধন পরিবহনের বাস চলাচল করতো। সেসময়ে বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান ছিলেন মহানগর বিএনপি সদস্য মাহবুব উল্লাহ তপন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বন্ধন পরিবহন থেকে সিটি বন্ধন পরিবহনের বাস ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের চলাচল শুরু করে। সেই সঙ্গে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন বন্ধন পরিবহন বিলুপ্ত করে সিটি বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান হন। একই সঙ্গে পরিবহনের এমডি ছিলেন কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আইয়ূব আলী।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির নেতাদের নজরে আসে বন্ধন পরিবহন। সেই সঙ্গে মাহবুব উল্লাহ তপনের নেতৃত্বে সিটি বন্ধন পরিবহনের মালিকরা নাম পরিবর্তন করে পুরানো নাম বন্ধন পরিবহনে নামে ফেরার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন মামলায় কারাবন্দি সাবেক ছাত্রদল নেতা জাকির খানের সমর্থকরা।

রোববার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সিটি বন্ধন পরিবহনের কাউন্টারে পাশে বন্ধন পরিবহনের কাউন্টার বসিয়ে বাস চালু করেন সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুব উল্লাহ তপন। একই সঙ্গে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির ওয়ার্ডভিত্তিক নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু হয়।

কিন্তু দুপুর ২টায় বিএনপি নেতা জাকির খানের কর্মী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী ঝটিকা হামলা করে। এসময় বন্ধন পরিবহনের কাউন্টারে থাকা বাস মালিক রুহুল আমিনকে পেটানো হয়। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন পরিবহন কার্যালয়ে ভাংচুর ও নেতাদের মারধর করে। পরে বন্ধন পরিবহনের কাউন্টার ও চেয়ার ভাংচুর চালায় তারা।

এবিষয়ে মাহবুব উল্লাহ তপন বলেন, আমরা বাস মালিকরা আগের নামে বাস চালু করেছিলাম। কিন্তু আমাদের উপর হামলা করে জাকির খানের সমর্থকরা। তারা অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করে। তাদের হামলায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

তবে সিটি বন্ধন পরিবহনের পরিচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, তপনের লোকজন দখল নিতে চাইলে বাস মালিকেরা বাধা দেয়।

হামলায় আহত নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন পরিবহনের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক দল মহানগরের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন বলেন, সিটি বন্ধন পরিবহনের স্থলে বন্ধন পরিবহন নিয়ন্ত্রণে নেয়। এটা বন্ধন পরিবহনের দুই পক্ষে বিষয়, কিন্তু হঠাৎ শ্রমিকদের অফিসে হামলা ভাংচুর চালায় দুই পক্ষ লোকজন। এতে সড়ক পরিবহন নেতা দেলোয়ার হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম রক্তাক্ত হয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে আটক করা হয়েছে। যারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইবে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, বাস চালু করা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘষের ঘটনা ঘটেছিলো। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ আটক করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

মোবাশ্বির শ্রাবণ/এএইচ/জিকেএস