কর্মবিরতিতে অডিটররা, দপ্তরে জমা রয়েছে কোটি টাকার চেক

জয়পুরহাটের পাঁচ উপজেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ে দুই সপ্তাহ ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন অডিটররা। এতে আটকে রয়েছে টোকেন সিস্টেমের সব সরকারি বিল। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।

১০ম গ্রেড বাস্তবায়নসহ চাকরিতে বিভিন্ন বৈষম্য দূরীকরণ ও ১১ দফা দাবি আদায়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এই কর্মসূচি পালন করছেন অডিটররা।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আক্কেলপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, কার্যালয়ে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা দপ্তরে বসে আছেন। দুজন অডিটর থাকলেও তারা দাবি আদায়ে কর্মবিরতিতে রয়েছেন। তাদের টেবিলে পড়ে রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি বিল। অডিটররা বিলগুলো পাস করছেন না। তবে সরাসরি অনলাইন সিস্টেমের বিল হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা পাস করছেন।

কার্যালয়ের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার তথ্যমতে, গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৭৪টি বিলের প্রায় কোটি টাকা আটকে আছে। অন্য উপজেলাগুলোর হিসাব রক্ষণ কার্যালয়েও একইভাবে আটকে রয়েছে টোকেন সিস্টেমের বিল।

আক্কেলপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর সাদ্দাম হোসেন জানান, ২০১৬ সালে রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) ও অধীনস্ত অফিসের পদকে ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার রায় দেন। অর্থ মন্ত্রণালয় এতে সম্মতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি দুষ্ট চক্রের কারণে কেউ ১০ম গ্রেডে উন্নীত হতে পারেননি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. ওয়ালিউল্লাহ শেখ জানান, ঠিকাদারি বিল পরিশোধের জন্য হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে বিলগুলো এখনো পাস করা হয়নি। এ কারণে ঠিকাদাররা বিল পাচ্ছেন না।

একই কথা জানান উপজেলা সমবায় অফিসার আবু হাসেম মো. মোকাররম হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দপ্তর থেকে এ মাসে মোট ১৪টি বিল জমা দেওয়া হয়েছে। হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের অডিটররা কর্মবিরতিতে থাকায় তারা বিলের টোকেন দিচ্ছেন না। এতে অর্থ পরিশোধের বিলগুলো আটকে আছে। কতদিনে বিল পাস হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা ভোগান্তিতে পড়েছি।’

ভোগান্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা প্রতুল কুমার মন্ডল বলেন, সরকারি বিল আমাদের কাছে এলে অডিটররা অনলাইনে তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টোকেনের মাধ্যমে বিল পাস করেন। আমি শুধু অনুমোদন করি। অডিটরদের কর্মবিরতিতে সরকারি অর্থ পরিশোধ আপাতত বন্ধ রয়েছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আইবাস প্লাস সার্ভারে যেগুলো বিল হয় সেগুলো প্রদান করা হচ্ছে।

আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম বলেন, হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের অডিটরদের কর্মবিরতিতে টোকেন সিস্টেমের সরকারি অর্থ পরিশোধ আপাতত বন্ধ রয়েছে। এতে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর এবং সেবাগ্রহীতারা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

এ বিষয়ে জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জয়পুরহাটে হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের অডিটররা কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে টোকেন সিস্টেমের বিলগুলো আটকে রয়েছে।

আল মামুন/এসআর/এমএস