নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পানির জন্য হাহাকার
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন। নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ থেকে শুরু করে খাওয়ার পানি পর্যন্ত পাচ্ছেন না তারা। সিটি করপোরেশন থেকে সরবরাহকৃত একটি পানির গাড়ি এলেও সেটা দিয়ে তাদের পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
বিশেষ করে গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকায় পানির সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। এলাকাজুড়েই পানির জন্য হাহাকার চলছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার গিয়েও সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না।
নবীগঞ্জ টি হোসেন রোড এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দিন বলেন, অনেকদিন ধরে আমরা পানির সমস্যায় ভুগছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি নিয়ে চলতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। পানির সমস্যার কারণে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। এই সমস্যার সমাধানের জন্য সিটি করপোরেশনে যাওয়া হয়েছে। কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই জায়গাটা উঁচু। এখানে যে পাম্প আছে সেটা কুলাতে পারে না। যার কারণে ওয়াশার পানি এখানে ওঠে না। তাই এখানে ডিপ বসালে আমাদের পানির সমস্যার সমাধান হবে।
মোল্লা বাড়ি রোড এলাকার বাসিন্দা সানজিদা মাহমুদ নামে এক নারী বলেন, প্রায় ৬ মাস ধরে পানির জন্য কষ্ট করতে হচ্ছে। একটা সংসারে পানির কত প্রয়োজন, সেখানে আমরা খাবার পানিটা পর্যন্ত পাই না। সকাল হলেই পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়ে যায়। পানির প্রয়োজন হলে নদীতে যেতে হয়।
তিনি আরও বলেন, নদীর পানি ব্যবহার করলে বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ হয়। নদীর পানি দিয়ে রান্না করা যায় না। পুকুরের পানিও দূষিত। এই পানি ব্যবহার করলে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে হয়। পানির এই কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।
সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শাওন অংকন বলেন, আমাদের মেয়র যখন ছিলেন তখন তাকে এই সমস্যার কথা বলা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন বিষয়টা দেখবেন। কিন্তু বর্তমানে মেয়র নেই। এখন নতুন করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি আমার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, বন্দরের কয়েকটি জায়গাতেই পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এরকম মাঝেমধ্যে হয়ে থাকে। আমরা এই সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে সাময়িকভাবে তাদের সমস্যা সমাধানের জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এফএ/এএসএম