বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ৩০৫ বস্তা সরকারি চাল লুটের অভিযোগ
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারণ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মো. মিন্নুর নেতৃত্বে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০-২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ডিলার হাসান আলী এ অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- নাভারণ পুরাতন বাজার গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদ্য বিলুপ্ত ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিন্নু (৫০), হাড়িয়া গ্রামের নিকারী খলিল (৫৫), আব্দুর রহিমের ছেলে অসিম (৪০), কিতাব আলীর ছেলে জাহিদ (২৬), বায়সা গ্রামের তরিকুল (৪৫), নাহিদ (৪০), মিলন (৪৫), আব্দুল মজিদের ছেলে শরিফুল (৫০), মতিয়ারের ছেলে হাফিজুর (৫০), চাঁন্দেরপোল গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে মিজান (৪৫), আসাকের ছেলে সোহাগ ডাক্তার (৪৮) ও বেড়ারুপানি গ্রামের মহব্বতের ছেলে ফন্টু (৪৫)।
স্থানীয় বাসিন্দা রমিজ উদ্দীনের স্ত্রী মমতাজ বেগম ও ছেলে নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত ২০০-২৫০ জন মোটরসাইকেলে এসে তালা ভেঙে নছিমন, ইজিবাইক ও ভ্যানে করে চাল এবং প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড নিয়ে গেছে। তারা টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেছে।
ডিলার হাসান আলী বলেন, হাড়িয়া নিমতলা মোড়ে সরকার প্রদত্ত ১৫ টাকা কেজি দরের চাল ডিলার পয়েন্ট থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ হতদরিদ্রের মাঝে বিতরণ করে আসছি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় ১নং আসামি আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার ক্ষতিসাধনসহ হাত-পা কেটে নেবে বলে হুমকি দেন আসামি।
তিনি আরও বলেন, চাল লুট হওয়ার ব্যাপারে ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ করেছি। সেনাবাহিনী এবং পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমি বিএনপির লোকজনের ভয়ে কোনো কিছু বলতে পারছি না।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান জানান, উত্তোলনকৃত ৫৪৪ বস্তার মধ্যে ডিলার হাসান আলীর গোডাউনে ২৩৯ বস্তা চাল মজুত রয়েছে। অবশিষ্ট ৩০৫ বস্তা চাল লুট হয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫৪৪ জন ভোক্তার মাঝে ডিলারকে চাল বুঝিয়ে দিতে হবে।
অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মো. মিন্নু বলেন, আমরা রাজনীতি করি। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হতেই পারে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধেও মামলা হচ্ছে। তাতে কোনো সমস্যা নেই। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হতেই পারে। অভিযোগের ওপর তদন্ত করে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
ঝিকরগাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইব্রাহীম আলী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জামাল হোসেন/এফএ/এমএস