সচিবালয়ে আনসারদের হামলায় নিহত শাহিনের দাফন
২৫ আগস্ট ঢাকায় সচিবালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করছিলেন আনসার সদস্যরা। সেখানে তারা উপদেষ্টাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরোধ করে রাখেন। রাতেও যখন আনসার সদস্যরা তাদের আটকে রাখেন তখন সেখানে যান শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন রাজধানীর কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল।
ছেলে সেখানে গেছে এই খবরে বসে থাকতে পারেননি বাবা শাহিন হাওলাদার। তিনিও ছুটে যান সচিবালয়ে। গিয়ে দেখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর আনসার সদস্যরা হামলা করছেন। তখন তিনি তা ঠেকাতে গেলে তাকেও মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহিন। পরে ওই দিনই তার মরদেহ নেওয়া হয় গ্রামের বাড়ি মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাজিকরখন্ডে। পরদিন বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
জানা যায়, নিহত শাহিন গাড়িচালক ছিলেন। থাকতেন পরিবারসহ ঢাকাতেই। বিএনপি সমর্থিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের সময় এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন।
নিহতের ভাই শিপন হাওলাদার বলেন, আনসাররা আমার ভাইয়ের মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ওই দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। তারপর আইসিইউতে থাকার পর মৃত্যু হয় তার।
ছেলে হাসান আহমেদ বিশাল বলেন, আমি ছাত্রদের সঙ্গে ছিলাম। সেই খবর শুনে বাবা ছুটে আসেন। পরে সেখানে এসে বাবা দেখেন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে মারধর করছেন আনসার সদস্যরা। হাসনাত আব্দুল্লাহকে ঠেকাতে গেলে সেখানে তাকেও মারধর করা হয়। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
স্ত্রী দীপ্তা বেগম বলেন, আনসার সদস্যরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই। আর পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য একটি চাকরির দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে।
মা কুলসুম বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের যেন বিচার হয়। আমার ছেলের পরিবার চলবে কীভাবে, সেজন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা হলে ভালো হয়।
আবু হোসাইন সুমন/জেডএইচ/এএসএম