ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

স্বস্তি ফেরেনি কুষ্টিয়ার চালের বাজারে

জেলা প্রতিনিধি | কুষ্টিয়া | প্রকাশিত: ০১:০৬ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিত্যপণ্যের বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কুষ্টিয়ার চালের বাজারে এখনো স্বস্তি মেলেনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কেজি প্রতি ২-৫ টাকা বৃদ্ধি পাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল।

কুষ্টিয়া শহরের পৌর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। চালের প্রকারভেদে কেজি প্রতি মিনিকেট ৬৮-৭০, কাজললতা ৬০-৬২, আটাশ ৫৬-৫৮, স্বর্ণা ৪৬-৪৮, বাসমতি ৮৬-৮৮, কালোজিরা ১১৫-১২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। যা আগের থেকে ২-৫ টাকা বেশি।

বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যাংক লেনদেন স্বাভাবিক না হওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করায় চালের বাজারে স্বস্তি মিলছে না। উল্টো দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর। ছোট-বড় মিলিয়ে এখানে প্রায় ৪৫০টি চালকল রয়েছে। যার মধ্যে অটোরাইস মিলের সংখ্যা প্রায় ১০০। বৃহৎ এই মোকামের বেশ কয়েকটি চালের মিল ঘুরে দেখা গেছে, মিল গেটে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৬৭ টাকা, কাজললতা ৬১ টাকা, বাসমতি ৮৩ টাকা ও আটাশ ৫৬ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চালের মানের ওপর নির্ভর করে দামওঠা নামা করছে বলে জানান মিলাররা।

স্বস্তি ফেরেনি কুষ্টিয়ার চালের বাজারে

খুব ভালো মানের চাল একটু বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আটাশ ধানের সরবরাহ কম থাকায় ও মূল্য বেশি হওয়ায় সবথেকে বেশি দাম বেড়েছে আটাশ চালের। তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কারণে চালের বাজারে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া দেশের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যা কবলিত হওয়ায় ফসলি মাঠ তলিয়ে গেছে। সেজন্য চালের বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়ছে বলেও জানিয়েছেন মিল মালিকরা।

মিলে ধান সরবরাহকারী শাহজাহান মোল্লা জানান, গত ১ আগস্ট মণ প্রতি ১৪০০ টাকা দরে আটাশ ধান কিনেছিলেন তিনি। সেই একই ধান এখন ১৫০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা বেশি দরে ধান কিনতে হলে চালের দাম অবশ্যই বাড়বে।

গোল্ডেন রাইস মিলের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিহানুজ্জামান জোহা জানিয়েছেন, ধানের দাম না কমলে চালের দাম কোনোভাবেই কমানো সম্ভব নয়। এজন্য কৃষক পর্যায়ে ধান উৎপাদনের খরচ কমাতে হবে। ধানের বীজ, সার, বিদ্যুৎসহ উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে খরচ কমাতে পারলে চালের দাম কমিয়ে আনা সম্ভব।

স্বস্তি ফেরেনি কুষ্টিয়ার চালের বাজারে

বাংলাদেশ অটো মেজর হাসকিং রাইস মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, দেশের বড় একটি অংশ বন্যা কবলিত হওয়ায় চালের বাজারে বেশ প্রভাব পড়েছে। বন্যার পানিতে ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এজন্য ফসল উৎপাদন অনেকাংশে কমেছে। তাছাড়া ধানের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। মিল গেটে জুলাই মাসের চেয়ে চলতি আগস্ট মাসে মোটা চাল কেজি প্রতি ৫ টাকা, মিনিকেট চাল ২ টাকা ও মাঝারি মানের চালের দাম ৩ টাকা বাড়তি বলেও জানান তিনি।

তবে চালের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক আছে বলে তিনি মনে করেন না। তিনি দাবি করেন, এখানকার মিলগুলোর উৎপাদন স্বাভাবিক ছিল। তবে সেসময় পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় বেশ কয়েক দিন মিল মালিকরা কুষ্টিয়া থেকে অন্য জেলায় চাল সরবরাহ করতে পারেননি। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণসহ ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন দেশের শীর্ষ এ চাল ব্যবসায়ী।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আখতার জানান, ব্যবসায়ীরা যাতে সিন্ডিকেট করে চালের দাম ইচ্ছামতো বাড়াতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর মনিটরিংসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আল-মামুন সাগর/এফএ/এএসএম