গাজীপুরে ওষুধ কারখানায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ
প্রতিমাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণসহ ১৬ দফা দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি ওষুধ কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে কারলসুরিচালা এলাকায় জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় শ্রমিকরা সফিপুর-বড়ইবাড়ি আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন।
শ্রমিকরা জানান, জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কারখানায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ নিয়ে প্রতিমাসেই তালবাহানা করে আসছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের বেতনও বাড়ানো হচ্ছে না। সবমিলিয়ে ১৬ দফা দাবি জানিয়ে শ্রমিকরা কারখানায় কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন।
কারখানা শ্রমিক রহিমা খাতুন বলেন, আমাদের বেতন কোনো মাসেই সঠিক সময়ে দেয় না। বেতন নিয়ে নানা তালবাহানা করে। বাসা ভাড়া দিতে হয়, দোকান বাকি দিতে হয়। সেগুলো সময় মতো দিতে না পেরে কথা শুনতে হয় আমাদের। আমাদের বেতন বাড়াতে হবে।
ওষুধ কারখানার শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো-
সকল ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৮ হাজার এবং পুরাতন স্থায়ী শ্রমিকদের ন্যূনতম ২০ হাজার করতে হবে। স্থায়ী শ্রমিককে ৩ হাজার টাকা এডজাস্টমেন্ট দিতে হবে। প্রতিমাসের ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে বেতন ও ওভার টাইম একসঙ্গে দিতে হবে। এক বছর হলে সকল ক্যাজুয়ালদের পার্মানেন্ট করতে হবে। সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন করতে হবে এবং মাতৃত্বকালীন ৬ মাসের ছুটি এবং বেতন-ভাতা প্রদান করতে হবে। আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত কর্মচারীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এডমিন এবং এইচআরের আওতায় ক্যান্টিন পরিচালনা করা যাবে না। শ্রমিক ইউনিয়নের আওতায় ক্যান্টিন পরিচালনা করতে হবে। অফিসার এবং শ্রমিক সবার খাবারের মান সমান হবে। কর্মক্ষেত্রে যদি কারো দুর্ঘটনা হয় তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। ঈদে ডিউটি কররে ডাবল হাজিরা সমমূল্যে বেতন দিতে হবে। কাউকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না, নাইট বিল ১৫০ টাকা। বাৎসরিক বেতন সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা বৃদ্ধি। প্রতি ৩ বছর পর পর শ্রমিকদের প্রমোশন। প্রতি বছরে ৪টা বোনাস (বেতনের অর্ধেক) এবং কোনো পার্মানেন্ট শ্রমিক যদি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে চলে যায় সেক্ষেত্রে তার পাওনাদি তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাল আল ফারুক বলেন, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক নিতাই চন্দ্র বলেন, শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। শ্রমিকদের দাবি নিয়ে মালিকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।
মো. আমিনুল ইসলাম/জেডএইচ/জিকেএস