ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পাঁচ হাসপাতালের চক্ষু রোগীর চিকিৎসা দেন দুজন চিকিৎসক

রুবেলুর রহমান | রাজবাড়ী | প্রকাশিত: ১১:০৫ এএম, ০১ আগস্ট ২০২৪

রাজবাড়ীতে প্রতিনিয়ত রোগী বাড়লেও সরকারি হাসপাতালে বাড়েনি চক্ষু চিকিৎসক। শুধুমাত্র সদর হাসপাতালের দুইজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে পুরো জেলার চোখের রোগীদের চিকিৎসা।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন প্রায় শতাধিকের বেশি চোখের রোগে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নেন। এ অবস্থায় রোগীদের সেবা দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সেইসঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চোখের চিকিৎসক না থাকায় বিপাকে পড়ছেন রোগীরা।

জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলায় সদর হাসপাতাল ও ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। এরমধ্যে শুধু রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুইজন চক্ষু রোগের জুনিয়র কনসালটেন্ট রয়েছেন। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে পোস্ট না থাকায় নেই কোনো চোখের চিকিৎসক।

পাঁচ হাসপাতালের চক্ষু রোগীর চিকিৎসা দেন দুজন চিকিৎসক

রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চোখের রোগীদের সেবা দিতে হাসপাতালে দুই জন জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু) রয়েছেন। এরমধ্যে একজন পুরুষ ও একজন মহিলা চিকিৎসক। জুন মাসে ২ হাজার ৭১৩ জন চোখের রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে ৭৬টি আপরেশন করা হয়েছে। সপ্তাহের রোববার ও বুধবার দুই দিন অপারেশন করা হয়। চোখের জরুরি চিকিৎসা, চশমা, এলার্জির চিকিৎসা ও ছানি অপারেশনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ২২২ নম্বর কক্ষের সামনে সিরিয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে ও বসে আছেন চোখের নানা অসুখে আক্রান্ত নানা বয়সী রোগী। এদের মধ্যে কেউ প্রথমবার, আবার কেউ দ্বিতীয় বা তারও অধিকবার দেখাতে এসেছেন। কক্ষের ভেতরে চিকিৎসকরা রোগীদের প্রাথমিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে পরামর্শ দিয়ে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।

চোখের ছানিজনিত রোগে আক্রান্ত কামাল উদ্দিন খান (৬৭) বলেন, হাসপাতালের ডাক্তাররা ভালোভাবেই দেখেন এবং সমস্যার কথা শোনেন। তবে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। সকালে ডাক্তাররা আসার আগেই তারা টিকিট নিয়ে দরজার সামনে এসে সিরিয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।

পাঁচ হাসপাতালের চক্ষু রোগীর চিকিৎসা দেন দুজন চিকিৎসক

আলেয়া খাতুন বলেন, হঠাৎ তার চোখব্যথা ও চোখে কাটা অনুভব হওয়ায় ডাক্তারের কাছে এসেছেন। অনেক ভিড়, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে সিরিয়াল পেয়ে ডাক্তার দেখিয়েছেন। মোটামুটিভাবে দেখে ওষুধ লিখে দিয়েছেন।

শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, চোখের ডাক্তাররা বেশ আন্তরিক। ভালোভাবে তার মায়ের চোখের পাওয়ার পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে চশমা লিখে দিয়েছেন। কিন্তু এক ঘণ্টার বেশি সময় সিরিয়ালে থেকে ডাক্তার দেখিয়েছেন। রোগীর চাপ অনুযায়ী ডাক্তার কম। এছাড়া অসহায়, গরিব রোগীরা বেশি এখানে আসে। উপজেলার সরকারি হাসপাতালে চোখের ডাক্তার থাকলে সদর হাসপাতালে চাপ কম হতো। এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, দুইজন চিকিৎসকের মাধ্যমে চোখের রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি বৈকালীন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। আউটডোরে গড়ে প্রতিদিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নেয়। গত জুন মাসে হাসপাতালে ২ হাজার ৭১৩ জন চোখের রোগী সেবা নিয়েছেন। এরমধ্যে ৭৬ জন রোগীর অপারেশন করা হয়েছে এবং সবগুলো অপারেশন সফল হয়েছে। কোনো রোগীর কোনো অভিযোগ নেই। এটা রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের বড় ধরনের সাফল্য। সাধারণ প্রায় সব অপারেশন এখানে করা হয়। শুধু জটিল অপারেশনের রোগী ঢাকায় পাঠানো হয়।

রাজবাড়ী সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটোন বলেন, রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ছাড়া উপজেলা হাসপাতালগুলোতে কোনো চোখের চিকিৎসক নেই এবং সেখানে কনসালটেন্টের পোস্টও নেই। সেখানকার মেডিকেল অফিসাররা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এর বাইরে চিকিৎসা প্রয়োজন হলে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে রেফার করেন। এখানে দুইজন চিকিৎসক আছেন এবং চোখের প্রায় সব ধরনের চিকিৎসা এখানে দেওয়া হয়।

এফএ/জেআইএম