নেত্রকোনায় ধীরগতিতে চলছে বাইপাস সড়ক নির্মাণ
নেত্রকোনায় ধীরগতিতে চলছে বাইপাস সড়ক নির্মাণকাজ। পাঁচ বছরে হয়েছে দেড় বছরের প্রকল্পের অর্ধেক কাজ। জেলা শহরের যানজট কমাতে প্রায় তিনশো কোটি টাকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন চায় এলাকাবাসী।
সওজ কর্তৃপক্ষ বলছে, তৃতীয় দফা সময় বৃদ্ধির পর প্রকল্পটি ২০২৬ সালের জুন মাসে বাস্তবায়ন হবে। আর জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, ভূমি জটিলতা কাটিয়ে শিগগির শেষ করা হবে অধিগ্রহণের কাজ।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সংযোগ মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পায়। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, কলমাকান্দা ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার মানুষের রাজধানীর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে নেওয়া হয় ২৯৬ কোটি টাকার বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি। নেত্রকোনার চল্লিশা-কুনিয়া-মেদনী-বাংলাবাজার বাইপাস প্রকল্প প্রায় ১৩.২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কে ৪টি পিসি গার্ডার সেতু ও ২২টি আরসিসি বক্স কালভার্টের কাজও ৫ বছরে সম্পন্ন হয়নি।
সড়কটি নির্মাণে প্রায় ৪৩.৪৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহণের কথা থাকলেও এখনো পরিশোধ করা হয়নি জমির মূল্য। তবে এক তৃতীয়াংশ ভূমি অধিগ্রহণের টাকা শিগগির বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
জেলা সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, বাইপাস সড়কের জন্য ২০১৯ সালের ১৭ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব পাঠানো হয়। এরইমধ্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য ৬২ কোটি টাকা জেলা প্রশাসন বরাবর ছাড় দেওয়া হয়েছে।
বাদে আমলী গ্রামের সুরুজ আলী, বাবুল মিয়া ও আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, পাঁচ বছর আগে জমি নিয়েছে। আজ পর্যন্ত টাকা দেওয়া হয়নি। সড়কের কাজ শেষ হলেও টাকা পাবো না। আমরা দ্রুত আমাদের ভূমি অধিগ্রহণের টাকা চাই।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রকল্পের কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। প্রকল্পের চল্লিশা এলাকায় মগড়া নদীর ওপর একটি সেতু, কারলী এলাকায় একটি, উলুয়াটিতে একটি ও দুধকুড়ি খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ শুরু হলেও শেষ হয়নি কাজ। সেতুগুলোর দুই পাশে নির্মিত হয়নি অ্যাপ্রোচ সড়ক।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আলনূর সালেহীন বলেন, প্রকল্পটির গড়ে প্রায় ৫২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সড়কের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কারণে কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। প্রকল্পটি ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে। আশা করি এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা যাবে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেন, বাইপাস সড়কের জমি অধিগ্রহণের কাজটি তিন ধাপে হচ্ছে। প্রথম ধাপে টাকা বিতরণ করা হবে। বাকি ধাপগুলোতে কাজের অগ্রগতি হচ্ছে। কিছু জায়গার কাগজপত্রে সমস্যা রয়েছে। এগুলো সমাধান হলেই কৃষকদের টাকা দেওয়া হবে।
এইচ এম কামাল/এফএ/জেআইএম