গাইবান্ধায় ফসলি জমিতে নির্মাণ হচ্ছে ইটভাটা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে প্রায় ১০০ বিঘা ফসলি জমিতে নির্মাণ হচ্ছে ইটভাটা। আলমডাঙ্গার কেকৈ কাশদহ গ্রামে মো. শফিকুল আজম চুন্নু ভাটাটি নির্মাণ করছেন।
প্রায় দুই মাস ধরে ভাটা নির্মাণের কাজ চলছে। এ কাজ দেখভাল করছেন তার ছেলে সিফাত হাসান সাগর। ফসলি জমিতে ভাটা নির্মাণ অবৈধ দাবি করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গাইবান্ধা ও সুন্দরগঞ্জ প্রশাসন এবং পরিবেশসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আলমডাঙ্গা হান্নানের মোড় থেকে এলজিইডির সড়কের দক্ষিণপাশে ভাটার নির্মাণ কাজ চলছে। ইট পোড়ানোর ছোট ছোট ঘর ও চিমনি বসানো হচ্ছে।
এলাকাবাসী ভাটার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ২০ ও ২৩ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত মুখ্য সচিব এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, এলজিইডির রাস্তার পাশে এ ভাটা নির্মাণ হচ্ছে। যেখানে ভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে তার পাশেই একই মালিকের আরেকটি এস আর বি নামে ইটভাটা আছে। পাশে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ভাটাটি প্রায় ১০০ বিঘা ফসলি জমিতে নির্মাণ হচ্ছে। এটি চালু হলে ওই এলাকার ফসলি জমির অস্তিত্ব থাকবে না। এছাড়া ওই এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে এবং এলাকার শতাধিক পরিবার সংকটে পড়বে।
২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী ফসলি জমিতে ইটভাটা করা নিষিদ্ধ। তবে ফসলি জমি বলতে দুই বা তিন ফসলি জমিকে বোঝানো হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই জমিগুলোতে ধান, পাট, আলু, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসল হয়। চার মাস আগেও ধান রোপণ করা ছিল জমিতে। সে জমিতেই নির্মাণ হচ্ছে ভাটা।
ভাটা যেখানে নির্মাণ হচ্ছে তার কিছু দূরেই রয়েছে কৃষক মতিনাল দাসের বাড়ি। তিনি বলেন, ইটভাটার কারণে বাড়িতে কোনো ফল হয় না। গাছে মুকুল এলে ঝরে যায়।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রোমান মিয়া বলেন, এই রাস্তা দিয়ে সারাদিন মাটি বহনকারী যান চলাচল করে। ফলে স্কুলে যেতে ভয় লাগে।
অভিযোগের বিষয়ে ভাটার মালিকের ছেলে সিফাত হাসান সাগর বলেন, আমি এসব দেখাশোনা করি। ইটভাটা চালু হলে এলাকার অনেকের কর্মসংস্থান হবে। আমাদের আরেকটি ইটভাটার পাশেই নতুন করে ভাটা নির্মাণের যে কাজ চলছে এটা উপজেলা প্রশাসনসহ সবাই জানে।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কোনো ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না এটা হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে। আমরা সেই নির্দেশনা পালন করে যাচ্ছি। উপজেলায় ফসলি জমি নষ্ট করে কেউ ভাটা নির্মাণ করলে সেই মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ এইচ শামীম/জেডএইচ/জেআইএম