হস্তান্তরের আগেই উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ
রাস্তা সংস্কারের পর হস্তান্তরের আগেই সড়কে ফাটল ধরেছে। উঠে গেছে বিটুমিন, কোথাও কোথাও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে সড়ক। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মহিপুরের বিপিনপুর-নিজামপুর সড়ক সংস্কারের কাজে উঠেছে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ। অনিয়মের চিত্র বেরিয়ে আশায় রাস্তা পরিদর্শন করে ফের সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু এবার নামে নয়, টেকসই মেরামতের দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংস্কারের এক মাস পার হয়নি, অথচ উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। দেখা দিয়েছে ফাটল। পার্শ্ববর্তী উপজেলা তালতলীর সঙ্গে যাতায়াতের অন্যতম এই রাস্তায় এখন মোটরসাইকেল, অটোরিকশার মতো হালকা যান গেলেও রাস্তা দেবে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে। এমনকি অনিয়মের বিষয়ে কথা বললে দেওয়া হতো মামলা হামলার ভয়।
নিজামপুর এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মন্নান হাওলাদার জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখানে মনগড়া কাজ করে গেছে। আমরা যখন কাজে বাধা দিয়েছি তখন বলেছে, ‘বেশি কথা বললে চাঁদাবাজি মামলা দেবো। দুই লাখ টাকা অফিসারদের দিলে আর কোনো সমস্যা হবে না, এভাবেই কাজ করে যাবো।’ এখন কাজ শেষ হওয়ার এক মাস পরই সব জায়গা থেকে বিটুমিন উঠে গেছে। আমাদের দাবি আবার সঠিকভাবে রাস্তা সংস্কার করা হোক। তা না হলে আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।
স্থানীয় ইসমাইল খান নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন কাঁচা রাস্তায় হেঁটেছি, এরপর ইটের রাস্তা ছিল। এখন সংস্কার করতে এসে নামেমাত্র কাজ করে গেলো। কাজ শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই কমপক্ষে ২০ জায়গা থেকে রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এই রাস্তা দরকার নেই, ভালো করে রাস্তা করে দেবে এটাই আমাদের দাবি।
এ ঘটনায় সাব-কন্ট্রাক্টরের গাফিলতি স্বীকার করে পুনরায় কাজ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে কাজটির দায়িত্ব পাওয়া মেসার্স শহিদুল এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্তাধিকারী মো. শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এখনো এলজিইডিকে কাজটা বুঝিয়ে দিইনি। তবে সাব কন্ট্রাক্টরের কিছুটা গাফিলতি এবং বৃষ্টিতে রাস্তাটি নষ্ট হয়েছে। যে জায়গাগুলো থেকে নষ্ট হয়েছে সেগুলো আমরা এখন আবার সংস্কার করে দেবো।
কাজের সর্বশেষ অবস্থা পরিদর্শন করে এলজিইডি কলাপাড়া সার্ভেয়ার মো. আল-আমিন জাগো নিউজকে বলেন, বৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা এমন হয়েছে। ফের সংস্কার করে না দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হবে না।
অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম জানান, কার্পেটিং ওঠা ও ভেঙে যাওয়ার সত্যতা পেয়েছি। দ্রুত এই রাস্তা সংস্কারে নির্দেশ দিয়েছি। এরপর আমরা আবার পরিদর্শন করবো। সঠিকভাবে কাজ না হলে তাদেরকে বিল দেওয়া হবে না।
এফএ/জিকেএস