সিরাজগঞ্জে বন্যায় গো-খাদ্যের সংকট
যমুনা নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চল ও নিচু এলাকা। এতে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুগুলোও বিপাকে পড়েছে। চারণভূমি ও চরাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের। পানিবন্দি এসব গবাদি পশুর জন্য সরকারিভাবে এখনো কোনো খাদ্য সরবরাহ করা হয়নি বলে জানান দুর্গতরা।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে দেখা যায়, উঁচু স্থানে বানভাসি মানুষ খোলা আকাশের নিচে থাকলেও গবাদি পশুগুলোকে পলিথিন কিংবা কাপড়ের তৈরি ছাউনিতে রাখা হয়েছে। অনেকের সেই সামর্থ্যটুকুও না থাকায় গবাদি পশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছেন। কষ্টে পালন করা এসব পশু চুরি কিংবা হারানোর ভয়ে কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত।
কাজীপুর মাইজবাড়ি ইউনিয়নের শহীদ এম মনসুর আলী ইকোপার্কে আশ্রয় নেওয়া গবাদি পশুর মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সপ্তাহ পার হলেও তারা কোনো গো-খাদ্য সহায়তা পাননি। উচ্চ মূল্যে খড় কিনে একবেলা, কোনো দিন দুবেলা খাবার দিচ্ছেন। চারদিক পানিতে নিমজ্জিত থাকায় প্রাকৃতিক কোনো খাবার জোগাড় করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে পাউবো সূত্র জানায়, সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৪৮ মিটার। গত ১২ ঘণ্টায় ৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৩৮ মিটার।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার গবাদিপশু ইতিমধ্যে পানিবন্দি। এসময় গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগব্যাধি সৃষ্টি হয়। এজন্য আমরা পাঁচটি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। তারা নিয়মিত বানভাসি কৃষক ও খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছেন। আর গবাদি পশুর খাদ্য সরবরাহের জন্য আমাদের বিভাগে কোনো বরাদ্দ নেই।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে পাঁচ হাজার ৩৬২ পরিবারের ২৩ হাজার ৮৩৬ মানুষ পানিবন্দি। তাদের মাঝে ইতিমধ্যে ৬০ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরও নতুন করে ৪৪০ টন চাল, নগদ ১০ লাখ টাকা ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ রয়েছে।
এসময় তিনি গবাদিপশুর খাদ্য সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এম এ মালেক/জেডএইচ/এমএস