ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি | গাইবান্ধা | প্রকাশিত: ০৭:৫০ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২৪

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে নদীর পানি বেড়ে গাইবান্ধার চার উপজেলার ২৭ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় নদী তীরবর্তী ৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে জেলায় ১৮১ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, গিদারি, মোল্লার ইউনিয়নে বিভিন্ন চরে ঘুরে সরেজমিন দেখা গেছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের তীরে চরাঞ্চলে নির্মিত ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অনেক টিনশেড ঘর বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক নৌকায় করে ঘরের নিরাপদে জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। শাক সবজি- কাঁচা মরিচ, করলা পুঁইশাক তিন- চারদিন আগে পানির নিচে তলে গেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গাইবান্ধার চার উপজেলার ২৭ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৫টি, সুন্দরগঞ্জে ৭টি, সাঘাটায় ৮টি ও ফুলছড়িতে ৭টি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২৮ হাজার ৯২৮টি পরিবার। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় তিন হাজার ৫১৮টি, সুন্দরগঞ্জে চার হাজার ৭০০টি, সাঘাটায় ১৩ হাজার ২৯০টি ও ফুলছড়িতে সাত হাজার ৪২০টি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় ১৮১টি স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ২৪টি, সুন্দরগঞ্জে ৪৮টি, সাঘাটায় ৩৬ এবং ফুলছড়িতে ২৩টি, সাদুল্ল্যাপুরে ৩৩টি, পলাশবাড়ীতে ৬টি ও গোবিন্দগঞ্জে ১১টি।

কামারজানি ইউনিয়নের খারজানি গ্রামের আব্দুল ছালাম বলেন, গত কয়েকদিন থেকে নদীতে খুব পানি বাড়ছে। রাতে আমাদের বাড়িঘর ডুবে গেছে। রান্না করতে পারছি না। খুবই কষ্টে আছি ভাই।

গাইবান্ধায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

গিদারি ইউনিয়নের ফলিয়ার ঘোব গ্রামে মো. মজিবর রহমান বলেন, কষ্ট করে খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। কিন্তু প্রাকৃতিক কাজ সারতে সমস্যায় পড়েছি। বিশেষ করে নারীরা দুর্ভোগে পড়েছেন বেশি।

চিরারকুটি চরের বাসিন্দা নাইজা বেগম বলেন, বাড়িঘর বন্যার পানিত ডুবে গেছে। এখন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছি।

জেলার গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা। পাঠদান বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা।

গাইবান্ধায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, জেলার চারটি উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গতকাল থেকে পানিতে নিমজ্জিত। এ কারণে ৭০টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৫টি বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যালয়ে আগের মতো পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. রোকসা বেগম ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জুয়েল মিয়া বলেন, বন্যাকবলিত চার উপজেলায় এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন তিন হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৬৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এসব বিতরণ শুরু হয়েছে। পানিবন্দিদের উদ্ধারের জন্য নৌকা, স্পিডবোট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। জেলা ও উপজেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। ইউনিয়ন ভিত্তিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম, কৃষি টিম, স্বেচ্ছাসেবক টিম ও লাইভস্টোক টিম গঠন করা হয়েছে।

এএইচ শামীম/আরএইচ/এএসএম