ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সমস্যা জর্জরিত খোকসা স্টেশন, কমছে যাত্রী

জেলা প্রতিনিধি | কুষ্টিয়া | প্রকাশিত: ০৬:৫৪ পিএম, ০২ জুলাই ২০২৪

জনবল সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জ্বলে না সিগন্যাল বাতি। ক্লোজিং ডাউন ঘোষণা দেওয়ায় এখন ট্রেনের ক্রসিংও বন্ধ রয়েছে। ফলে ঢাকাগামী তিন জোড়া আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেনসহ অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীবাহী বেশিরভাগ ট্রেন স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করে রাখা হচ্ছে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

এমনই নানা সমস্যায় জর্জরিত পশ্চিম রেলওয়ের শত কিলোমিটার দীর্ঘ পোড়াদাহ-রাজবাড়ী রুটের মধ্যবর্তী খোকসা স্টেশন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একজন স্টেশন মাস্টার, দুজন বুকিং সহকারী, চারজন পয়েন্টম্যান, চারজন পোটার, ক্লিনার ও মালিসহ ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনুমোদন রয়েছে রেলওয়ে স্টেশনে। তবে বছর দুয়েক আগে খোকসা স্টেশনের মাস্টার তৈফিক আহম্মেদকে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে (ডেপুটেশন) সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর একজন বুকিং সহকারী আর একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ চার কর্মচারী দিয়ে স্টেশনটি সচল রাখা হয়েছে।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির নিয়মিত ক্রসিং রয়েছে এখানে। কিন্তু স্টেশনটি ক্লোজ ডাউন ঘোষণা করায় এখানে ট্রেনের ক্রসিং ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। ফলে পাংশা অথবা কুমারখালীতে ক্রসিং করা হয়। আর এ কারণেই ট্রেন জোড়া প্রতিদিনই ৪০ মিনিট বিলম্বে চলাচল করে। ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস, নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস, টুঙ্গিপাড়া-রাজশাহী রুটে চলাচল করা টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়াও দুই জোড়া শাটলসহ একাধিক যাত্রীবাহী ট্রেন স্টেশনে এসে পরবর্তী গন্তব্যের লাইন ক্লিয়ার পাওয়ার আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, খোকসা স্টেশনে যাত্রীদের টিকিট বুকিং ও পণ্য পরিবহন থেকে প্রতিমাসে রাজস্ব আয় হয় ১৫ লাখ টাকার বেশি। বেসরকারি খাতে চলাচলকারী ট্রেন থেকেও বেশি আয় হচ্ছে। স্টেশনে প্রয়োজনীয় জনবল থাকলে রাজস্ব আরও বাড়তো।

সমস্যা জর্জরিত খোকসা স্টেশন, কমছে যাত্রী

রেল নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন সংগীতশিল্পী খন্দকার সেলিম রেজা। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে প্রতিদিনই লাইন ক্লিয়ার পাওয়ার অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেনগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। যাত্রীরা ভোগান্তিতে বিরক্ত হয়ে ট্রেনের টিকিট করা বন্ধ করে দিচ্ছেন। তারা সময়মতো কর্মক্ষেত্রে পৌঁছাতে পারছেন না।’

স্টেশনে ৩০ বছর ধরে পান ও প্রসাধনীর ব্যবসা করেন ইসলাম আলী। তিনি শুনেছেন অবিভক্ত বাংলায় এই স্টেশন থেকে ট্রেনে করে কলকাতায় যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন করা হতো। পদ্মা-গড়াই নদীর ভাটি অঞ্চলের মানুষ নৌকায় এসে এখান থেকে ট্রেনে যাতায়াত করতেন।

ইসলাম আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন গাড়ি আছে অনেক। কিন্তু নানা সংকটে যাত্রীরা ট্রেনে আসা-যাওয়া কষ্টের মনে করেন। তাই দিনদিন যাত্রীর সংখ্যা কমছে।’

এ বিষয়ে ডেপুটেশনে থাকা স্টেশন মাস্টার তৈফিক আহম্মেদ বলেন, পাংশ ও কুমারখালীতে সার্কিট ব্রেকিং হওয়ায় প্রতিদিন সকাল হলেই মধুমতি অথবা টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে বিলম্বে ছাড়া হচ্ছে। ফলে দিনের প্রথম ট্রেনটি পৌনে এক ঘণ্টা বিলম্বে যাত্রা করছে। সমস্যা সমাধনে দ্রুত স্টেশনটি ক্লোজিং ডাউন থেকে অবমুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী পোস্টিং করলে যাত্রী ভোগান্তি কমবে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইলফোনে কল দিলে রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আল-মামুন সাগর/এসআর/এমএস