ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ব্রিজ দুর্ঘটনা

সব হারিয়ে ছোট্ট সাবরিনকে বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছেন বাবা সোহেল

আসাদুজ্জামান মিরাজ | বরগুনা থেকে | প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ২৩ জুন ২০২৪

বাবার কোলে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছয় মাস বয়সী সাবরিন। সে হয়তো জানে না তার মা আর নেই। মেয়েকে নিয়ে বৌভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন তার মা।

বরগুনার আমতলীতে ব্রিজ ভেঙে মাইক্রো খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাবরিনের বাবা সোহেল খান বলেন, আমার ছয় মাসের শিশু কন্যা সাবরিন। তার মা রাইতিসহ ১৬ জন আত্মীয় স্বজন একটি মাইক্রোবাসে ছিল। সেতু ভেঙে মাইক্রোবাসটি যখন নদীতে ডুবে যাচ্ছিল রাইতি তখন কোল থেকে সাবরিনকে কচুরিপানার মধ্যে ফেলে দেয়। পেছনে একটি অটোতে তিনিসহ দুইজন আত্মীয় ছিলেন। তারাও পানিতে ডুবে যাচ্ছিলেন। তিনি কোনোভাবে সাঁতরে ওপরে উঠে আসতেই কচুরিপানার ওপর তার চোখ পড়ে। দেখেন কচুরিপানার ওপর সাবরিন। সঙ্গে সঙ্গে নিজের সন্তানকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন তিনি।

সব হারিয়ে ছোট্ট সাবরিনকে বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছেন বাবা সোহেল

সোহেল খান আহাজারি করে বলেন, ‘এভাবে আমার সবকিছু কেড়ে নিলা আল্লাহ! ছোট মেয়েটাকে নিয়ে আমি এখন কিভাবে বাঁচবো?’

শনিবার (২২ জুন) বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের মাঝামাঝি হলদিয়া ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে সাবরিনের মা রাইতি খানসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন।

সব হারিয়ে ছোট্ট সাবরিনকে বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছেন বাবা সোহেল

জানা যায়, শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমির সহকারী শিক্ষক উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনিরের মেয়ে হুমায়রা আক্তারের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মাহমুদের ছেলে ডা. সোহাগের বিয়ে হয়। গত শুক্রবার ওই কনেকে বরের বাড়ি তুলে আনেন। শনিবার মেয়ের পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে মাইক্রো এবং অটোরিকশায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হলদিয়া ব্রিজ পার হওয়ার সময় ব্রিজের মাঝের অংশ ভেঙে যায়। এতে মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাটি নদীতে পড়ে যায়। অটোতে থাকা যাত্রীরা সকলে সাঁতরে কিনারে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নদীতে তলিয়ে যান।

সব হারিয়ে ছোট্ট সাবরিনকে বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছেন বাবা সোহেল

নিহতরা হন রুবিয়া (৪৫), রাইতি (২২), ফাতেমা (৫৫), জাকিয়া (৩৫), রুকাইয়াত ইসলাম (৪), তাহিয়া মেহজাবিন আজাদ (৭), তাসফিয়া (১৪), ঋধি (৪) ও রুবি বেগম (৩৫)। এদের মধ্যে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে। অপর নিহত ৭ জনের বাড়ি মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামে। এরা কনে হুমায়রার মামা বাড়ির আত্মীয়-স্বজন।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এফএ/জিকেএস