ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মিয়ানমার সীমান্তে গুলি

ঝুঁকি নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে ফিরলেন ২ শতাধিক মানুষ

জেলা প্রতিনিধি | কক্সবাজার | প্রকাশিত: ০৩:৫৮ এএম, ১৪ জুন ২০২৪

সপ্তাহখানেক আটকে থাকার পর বিকল্প পথে চারটি ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে ফিরেছেন দুই শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে হোটেলের কর্মী, শ্রমিক ও বিভিন্ন কাজে গিয়ে আটকাপড়া লোকজন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে ট্রলারে রওয়ানা দিয়ে দুপুর আড়াইটায় টেকনাফ পয়েন্টে পৌঁছান তারা।

মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্তে গোলাগুলি অব্যাহত থাকায় জেলা প্রশাসনের খাদ্যসামগ্রী বহনকারী নৌযান সেন্টমার্টিন যেতে পারেনি। এ কারণে উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এমনটি জানিয়েছেন দ্বীপ ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, ঈদের ছুটি বা বিভিন্ন কাজে গিয়ে সেন্টমার্টিনে আটকাপড়া লোকদের নিয়ে চারটি ট্রলার রওয়ানা হয়। ট্রলারগুলো মূলত বঙ্গোপসাগর হয়ে টেকনাফে পৌঁছায়।

তিনি জানান, খাদ্যসামগ্রী নিয়ে টেকনাফ থেকে যে নৌযানটি সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা ছিল, সেটি যেতে পারেনি। বুধ ও বৃহস্পতিবার নাফ নদীর সাবরাংয়ের বিপরীতে রাখাইনের একটি এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। বিকল্পপথে হয়তো আগামীকাল (শুক্রবার) কক্সবাজার থেকে এই খাদ্য সামগ্রী পৌঁছাতে পারে।

jagonews24

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, দ্বীপের উন্নয়ন কাজে আসা শ্রমিক, হোটেল কর্মীসহ বিভিন্ন কাজে সেন্টমার্টিন আসা শতাধিক লোক আটকা পড়েছিল। নাফ নদীর ঘোলারচর এলাকায় মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বিনা উসকানিতে ট্রলারে গুলি করার কারণে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আটকাপড়া এসব মানুষকে বিশেষ ব্যবস্থায় বিকল্প পথে টেকনাফে ফেরানো হচ্ছে। সময় যত যাচ্ছে, ততই অনিশ্চয়তা বাড়ছে দ্বীপের মানুষের মধ্যে। খাদ্য সহায়তা খুবই প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে গোলার বিকট শব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, নাফ নদীর মোহনা ও সীমান্তে সকালে-বিকেল-রাতে খুব গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। নদীর ওপারে ঠিক কোন এলাকায় এ ঘটনা ঘটছে সেটি নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। আজ (বৃহস্পতিবার) অনেক ঝুঁকি নিয়ে চারটি ট্রলার করে প্রায় ২৭০ জনের মতো লোক এসেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে বড় বড় ঢেউয়ে অনেক ঝুঁকি ছিল। ট্রলারের অনেকে বমি করেছে। টেকনাফ ঘাটে এসে হয়রানিরও শিকার হচ্ছে মানুষ। এখন টেকনাফে অবস্থানরত কেউ সেন্টমার্টিনে যেতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। সাগরও অতি উত্তাল রয়েছে।

সেন্টমার্টিন থেকে ট্রলারে টেকনাফ আসা অ্যাডভোকেট কেফায়েত উল্লাহ বলেন, জীবন নিয়ে ফিরে এসেছি, এটাই আল্লাহর রহমত। বঙ্গোপসাগরের বড় বড় ঢেউয়ে জীবনের চরম ঝুঁকি অতিক্রম করেছি।

তিনি অনুরোধ করে বলেন, ট্রলারে বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে কারও টেকনাফ আসা উচিত নয়। একটু উনিশ-বিশ হলেই মাঝসাগরে ট্রলার ডুবে সলিল সমাধি হতে পারে।

সীমান্তে দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার থেকে ফের বিকট শব্দে এপারের মানুষজনের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে। আমরা জেনেছি, ওপারে সংঘাত তীব্র হচ্ছে। ফলে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। তাই সীমান্তরক্ষীরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে।

মিয়ানমারের মংডুসহ কয়েকটি গ্রামে সে দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত টহল দিচ্ছেন। তারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবসময় প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।

সায়ীদ আলমগীর/এসএএল/কেএএ/