ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নেত্রকোনায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর মামলা

জেলা প্রতিনিধি | নেত্রকোনা | প্রকাশিত: ০৮:১৭ পিএম, ১১ জুন ২০২৪

নেত্রকোনা সদর উপজেলায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি থেকে পিস্তল, গুলি, বোমাসহ ৮০ ধরনের সরঞ্জাম জব্দের ঘটনায় মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকেলে নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলাটি করেন পরিদর্শক (তদন্ত) আনিছুর আশেকিন।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন পিরোজপুরের নেছারাবাদ(স্বরূপকাঠি) থানার উত্তর বালিহারি গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে হামিম হোসেন ওরফে ফাহিম ওরফে আনোয়ার হোসেন ওরফে শাহজালাল, তার স্ত্রী উম্মে হাফছা (২৫), ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ এলাকার আব্দুল হাইয়ের জামাতা সাইফুল্লাহ ওরফে সাইফুল (৪২) এবং সাতক্ষীরা সদরের মাগুরা পূর্বপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম ওরফে আতিক (৩৭)।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে জেলা পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল (সোয়াত), সাইবার টিমসহ বেশ কয়েকটি বিশেষ টিমের সমন্বয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ হয় রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। এর আগে শনিবার দুপুর ১টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে জেলা পুলিশ। ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন অভিযান সম্পন্নের ঘোষণা দিয়ে নিশ্চিত করেন বাড়িটি জঙ্গিদের একটি প্রশিক্ষণ শিবির।

আরও পড়ুন:

অভিযানে পিস্তল, গুলি, ল্যাপটপ, ওয়াকিটকি, মোবাইলফোন, রামদাসহ ৮০ ধরনের মালামাল জব্দ করা হয়। এছাড়া ছয়টি শক্তিশালী আইইডি (দূর নিয়ন্ত্রিত) বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। প্রায় তিন একর জমিতে থাকা উঁচু প্রাচীর দেওয়া বাড়িটিতে তারা আড়াই বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন বলে জানায় পুলিশ।

অভিযান শেষে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন ব্রিফিংয়ে জানান, বাড়িটিতে ফাহিম ওরফে আরিফ নামের এক যুবকসহ কয়েকজন ভাড়া থাকতেন। আরিফ গত ৫ জুন নরসিংদীর রায়পুরায় অস্ত্রসহ গ্রেফতার হন। ওই ঘটনার সূত্র ধরে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের ফোনটি বন্ধ রয়েছে। ঘটনার তার সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে চাননি ডিআইজি।

শনিবার দুপুরে প্রথমে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি আবুল কালামের নেতৃত্বে ভাসাপাড়া গ্রামের দোতলা বাড়িটিতে অভিযান শুরু হয়। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, ১৭টি গুলি, দুটি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া ও এক বস্তা বই উদ্ধার করা হয়। পরে অ্যান্টি-টেরোরিজম ইউনিট ও সোয়াট টিম রোববার দ্বিতীয় দফা অভিযান চালায়।

অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তারা বলেন, বাড়িটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এখানে যে ধরনের এক্সক্লুসিভ ডিভাইস পাওয়া গেছে তার সঙ্গে ২০১৭ সালে মোহাম্মদপুরে একটি জঙ্গি আস্তানায় উদ্ধার সরঞ্জামের মিল রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাড়ির ভেতরে থাকা দুটি বড় পুকুরে মাছ চাষ করা হয়। এছাড়া প্রাচীরের ভেতরে একটি আধাপাকা টিনের ছাউনি ঘর আছে। ভাড়া দেওয়ার পর ভাড়াটিয়ারা বাড়ির সীমানা প্রাচীর আগের চেয়ে আরও দেড় ফুট উঁচু করেন। ফলে ওই বাড়ির কিছুই বাইরে থেকে দেখা যেতো না। বাড়িটির নরিকেল গাছ, আমগাছসহ সীমানা প্রাচীরের বিভিন্ন জায়গায় ২৫-৩০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। ওই বাড়িতে স্থানীয় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হতো না।

জেলা পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বলেন, বাড়িটির ভেতরে ১৫-২০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপযোগী পরিবেশ ছিল। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জঙ্গি তৎপরতায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এইচ এম কামাল/এসআর/এমএস