১০ লাখে মিলবে ২০ মণের ‘বাঘা’
অচেনা মানুষ দেখলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। করে বাঘের মতো গোঙানির আওয়াজ। তাইতো বাঘের সঙ্গে মিলিয়ে নাম রাখা হয়েছে ‘বাঘা’। তবে মালিকের সামনে ভীষণ শান্ত। গত দেড়বছর ধরে নিজের সন্তানের মতো পরম যত্ন আর ভালোবাসায় ‘বাঘা’ নামের এই ষাঁড়টিকে কোরবানিতে বিক্রির উপযোগী করে তুলেছেন শরীয়তপুরের বিলকিস ও ফারুক দম্পতি। আনুমানিক ২০ মণের বাঘার দাম হাঁকানো হচ্ছে ১০ লাখ টাকা।
সরেজমিন জানা যায়, শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধানুকা এলাকার গাছকাটার শ্রমিক ফারুক ঢালীর বাড়িতে ‘বাঘা’ নামের ষাঁড়টিকে লালন-পালন করা হচ্ছে। তার স্ত্রী বিলকিস বেগম দেড় বছর আগে ননদ আসমা বেগমের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ষাঁড়টি দেখতে পান। তখন এর বয়স ছিল মাত্র দেড়বছর। ষাঁড়টি তার মনে ধরায় লালন-পালন করার কথা জানান স্বামী ফারুক ঢালীকে। পরে ফারুক ঢালী দেড় লাখ টাকায় ষাঁড়টি কিনে বাড়ি নিয়ে আসেন। এরপর পরিবারের সবাই মিলে পরম যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে ষাঁড়টিকে বড় করা শুরু করেন।
আকার-আকৃতি ও স্বভাব কিছুটা ক্ষিপ্র হওয়ায় এর নাম রাখা হয়েছে ‘বাঘা’। প্রতিদিন তার খাদ্য তালিকায় রয়েছে পাঁচ কেজি গমের ভুসি, এক বোঝা কাঁচা ঘাস, সাত কেজি খড় ও চার হালি দেশি কলা। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা বাঘার উচ্চতা ৭ ফুট। দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ও ওজন অন্তত ২০ মণ। বিশালদেহী বাঘাকে দেখতে প্রতিনিয়ত ফারুক ঢালীর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশের লোকজন।
ফারুক ঢালীর স্ত্রী বিলকিস বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিজের সন্তানের মতো বাঘাকে লালন-পালন করেছি। কারেন্ট চলে গেলেই ও বুঝতে পারে আর আমাকে ডাকে। আমিও সঙ্গে সঙ্গে ওরে গোসল করাই, গা মুছাই দেই। অন্য মানুষ দেখলেই ও লাফালাফি করে কিন্তু আমি গেলে একদম শান্ত হয়ে দাঁড়াই থাকে। মানুষ যেমন কষ্ট করে কোরবানি দেয়ার জন্য, তেমন আমিও আল্লাহর নামে ওরে দিমু। আল্লাহ যদি তৌফিকে রাখে তাহলে বাঘাকে বিক্রি করে আমার সন্তানের ইচ্ছা পূরণ করবো।’
জামাল ঢালী নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ষাঁড়টিকে যখন বাইরে আনা হয়, তখন কমপক্ষে ছয়জন লোক আর মোটা চারটি দড়ির দরকার পড়ে। একদম বাঘের মতো উত্তেজনা করে। ষাঁড়টি অনেক বড়।’
বুলবুল আহমেদ নামের আরেক যুবক বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে অনেক গরু দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। তবে ফারুক কাকার বাঘার মতো এত বড় ষাঁড় এর আগে দেখার সুযোগ হয়নি। আমার দেখা এটাই সবচেয়ে বড় ষাঁড়।’
কথা হয় ষাঁড়টির মালিক ফারুক ঢালীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাঘা’ আমার পরিবারের একজন। ওকে দল ঘাস আর খড়কুটা ছাড়া বাইরের খাবার খাওয়াই না। গতবছর বিক্রি করার কথা ভেবেছিলাম। তখন এর দাম বলেছিল তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ বছর ভারতীয় গরু না আসায় মনে হচ্ছে বাঘার ন্যায্য দাম পাবো।
বিধান মজুমদার অনি/এসআর/এএসএম