ভুয়া কাবিননামায় বিয়ে, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
মানিকগঞ্জে ভুয়া কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে শারীরিক সম্পর্ক ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই নারী স্ত্রীর মর্যাদা পেতে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানায় কর্মরত রয়েছেন। তার নাম আকবর আলী খন্দকার। এর আগে ওই সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) সদর থানায় কর্মরত ছিলেন।
ওই সময় আকবর আলী সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসরত এক নারীর সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন করে স্ত্রী পরিচয়ে শারীরিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, স্ত্রী হিসেবে পরিবারের সঙ্গে পরিচয় ও সামাজিক মর্যাদা দিতে অস্বীকার করায় ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী ওই নারী পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তাতে কোনো সুরাহা না হওয়ায় চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি মানিকগঞ্জের লিগ্যাল এইডে অভিযোগ করেন।
এএসআই আকবর আলী হুমকি-ধমকি দিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে আপস মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভুক্তভোগী তাতে রাজি না হয়ে স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা পেতে গত ২৪ এপ্রিল মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
ভুক্তভোগী নারীর করা লিগ্যাল এইডের প্রতিবেদন ও আদালতের মামলা সূত্রে জানা গেছে , বিগত এক বছর আগে আমিনুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ২ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন ভুক্তভোগী নারী। সেই টাকা কথামত ফেরত না দেওয়ায় আমিনুরের বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ করেন তিনি। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর থানায় কর্মরত সহকারী উপ-পরিদর্শক আকবর আলী খন্দকারের সাথে পরিচিত হন৷ পরবর্তীতে তারা মোবাইলে বিভিন্ন সময় কথা বলতেন এবং আলী আকবরের কথামতো বিভিন্ন জায়গায় দেখা করতেন। এর মধ্যে এএসআই আকবর আমিনুরের কাছে থেকে ভুক্তভোগী নারীকে এক লাখ টাকা আদায় করে দেন। কথা ও দেখা করার মাধ্যমে একপর্যায়ে তারা প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর গত বছরের ১০ অক্টোবর মায়ের অসুস্থতার কথা বলে ভুক্তভোগী নারীর কাছে থেকে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা নেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
এরপর গত বছরের ১৪ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে ভুক্তভোগী নারীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এক ব্যক্তিকে কাজী পরিচয় দিয়ে নিয়ে আসেন এএসআই আকবর আলী খন্দকার। তখন পাঁচ লাখ টাকা কাবিন করিয়া কাবিননামায় স্বাক্ষর নেয়। তবে চাকরির ক্ষতি হবে বলে আপাতত বিয়ের কথা গোপন রাখার কথাও জানান তিনি। এরপর থেকে নিয়মিত ভুক্তভোগীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস ও শারীরিক সম্পর্ক করেন আকবর আলী খন্দকার।
এ বিষয়ে হরিরামপুর থানার এএসআই আকবর আলী জানান, একটি কাজের সুবাদে ওই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো প্রেম অথবা শারীরিক সম্পর্কের ঘটনা ঘটেনি। তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী বলেন, আদালতের মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। তাদের প্রতিবেদনে আদালত ব্যবস্থা নিবেন। আমাদের দফতরে যে অভিযোগ সেটিরও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএম খোরশেদ/আরএইচ/জেআইএম