তীব্র গরমে ব্র্যান্ডের ফ্যানেই আস্থা ক্রেতাদের
চুয়াডাঙ্গায় তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা এখন চুয়াডাঙ্গায়। কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। একটানা অনেকদিন এই আবহাওয়া বিরাজমান। এ কারণে বেড়েছে রিচার্জেবল ফ্যানসহ টেবিল ফ্যানের চাহিদা। তবে নন ব্র্যান্ডের বাজারে নেমেছে ধস। মাল স্টকে থাকলেও অন্যবারের মতো এবার নন ব্র্যান্ডের চাহিদা নেই।
বর্তমানে ওয়ালটন, মার্সেল, যমুনা, মিনিস্টারের আউটলেটগুলোর দখলে আছে চুয়াডাঙ্গার ফ্যানের বাজারের প্রায় ৫০ শতাংশ। তবে চুয়াডাঙ্গা শহরের আলী হোসেন সুপার মার্কেটসহ শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে নন ব্র্যান্ডের রিচার্জেবল ও ইলেকট্রিক সিলিং ও টেবিল ফ্যানের দোকান রয়েছে। সেখানে কিন্তু ফ্যান বিক্রি একদমই নেই। এছাড়া জেলার উপজেলা শহরগুলোতে ভিশন ফ্যানের বিক্রিও বেশ ভালো।
বিক্রেতারা বলছেন, ভিশন ফ্যানের বিক্রি মোটামুটি আছে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই আমরা ভিশন ফ্যান বিক্রি করে থাকি।
সরোজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অতি তীব্র দাবদাহে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে হতেই মানুষের আনাগোনা কমছে। শ্রম বিক্রি করে খাওয়ার দিনমজুর ছাড়া কাউকেই তেমন একটা বাইরে দেখা যাচ্ছে না। একই চিত্র চুয়াডাঙ্গার ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক মার্কেটগুলোতে। অন্যবার সারাদিন প্রচুর ফ্যান বিক্রি করলেও, এখন ক্রেতাই পাচ্ছে না তারা। যদিও সারাদিনে কয়েকজন ক্রেতা ফ্যান কিনতে আসছেন, কিন্তু আগেরবারের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
বিক্রেতারা বলছেন, ডলার সংকটসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের বেশি দাম দিয়ে প্রোডাক্ট কিনতে হচ্ছে। ফলে অন্যবারের তুলনায় এবার একটু বেশি দামেই বিক্রি করা লাগছে। আবার অন্যবারের থেকে এবার বিদ্যুতের লোডশেডিং খুবই কম হচ্ছে। তাই মানুষ স্বস্তিতেই ঘরের মধ্যে থাকছে। লোডশেডিং হলে আরেকটু বেচাকেনা বেশি হতো।
চুয়াডাঙ্গার আলী হোসেন মার্কেটে অবস্থিত সেতু ইলেকট্রনিক্সের এক কর্মচারী বলেন, গতবার প্রচুর ফ্যান বিক্রি করেছি। তবে এবার বিক্রি একেবারেই নেই বললেই চলে।
একই মার্কেটের ব্যবসায়ী শিলন বলেন, বিভিন্ন শোরুমে ফ্যান বিক্রির ফলে মার্কেটে এর বিক্রি কমেছে। এছাড়া এবছর বিক্রিও কম।
চুয়াডাঙ্গা সদরের মাখালডাঙ্গা গ্রাম থেকে আলী হোসেন মার্কেটে ফ্যান কিনতে আসা কৃষক রহিম বলেন, তীব্র গরমে ফ্যান ছাড়া থাকতে পারছি না। বড় ফ্যান কেনার ইচ্ছা ছিল। এসে দেখছি সেগুলোর দাম বেশি। তাই সাধ্যের মধ্যে ছোট ফ্যান পেলাম, সেটাই কিনছি।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলতদিয়ার এলাকার কাশেম আলী মার্সেল ব্র্যান্ডের শোরুমে টেবিল ফ্যান কিনতে এসে বলেন, চুয়াডাঙ্গায় তীব্র দাবদাহ চলছে। ঘরের ছাদ রোদের তাপে গরম হয়ে যাচ্ছে। তাই সিলিং ফ্যানেও গরম বাতাস লাগছে। এজন্য টেবিল ফ্যান কিনতে এসেছি।
ওয়ালটন শোরুমে ফ্যান কিনতে আসা সাত্তার আলি বলেন, চুয়াডাঙ্গায় প্রচুর গরম পড়েছে। বিদ্যুৎ ঠিকভাবে থাকে না। তাই সিলিং ফ্যানের পাশাপাশি রিচার্জেবল ফ্যান কিনতে এসেছি।
এদিকে ওয়ালটন শোরুমের চুয়াডাঙ্গা শাখার ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান বলেন, আগের বছরের তুলনায় এবার ওয়ালটন ফ্যানের চাহিদা বেশি। এই গরমে মাসে প্রায় দুইশোর অধিকার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ জানান, চুয়াডাঙ্গার বড় বাজারের আলী হোসেন সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি। যাতে করে রিচার্জেবল ফ্যান ও লাইটে অতিরিক্ত দামে বিক্রি না হয়। কয়েকদিন আগে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এফএ/এএসএম