খরায় পাটক্ষেত ফেটে চৌচির
রাজবাড়ীতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি চাষ হয় পাট। কিন্তু এবার তীব্র দাবদাহ ও অতিরিক্ত খরায় পাট চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। একইসঙ্গে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
চাষিরা জানান, অতিরিক্ত খরায় ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির। সকালে পানি দিলে বিকেলের আগেই শুকিয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে পাট বেড়ে উঠছে না। শ্যালো মেশিনেও উঠছে না পানি। দাবদাহ বেশি হওয়ায় বিগত সময়ের তুলনায় জমিতে সেচ লাগছে বেশি। যে কারণে এবার ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
রাজবাড়ী কৃষিপ্রধান জেলা। নদীবেষ্টিত এ জেলায় ধান, গম, পেঁয়াজ, রসুন, মশুর, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি অধিক হারে চাষ হয় পাট। জেলার পাঁচ উপজেলায় কমবেশি পাট চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি চাষ হয় বালিয়াকান্দি ও রাজবাড়ী সদর উপজেলায়। এ বছর ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত চাষ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে।
পাটচাষি নুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার পাট নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। সার, বীজ, কীটনাশকসহ সব কৃষিপণ্য বেশি দামে কিনে চাষ করা পাট ভালো হচ্ছে না। অতিরিক্ত খরায় ক্ষেত শুকিয়ে পাট বেড়ে উঠছে না।’
চাষি আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আগে এসময় যেখানে দুইবার সেচ দিতে হতো, এবার সেখানে ৪-৫ বার পানি দিয়েও কূল পাচ্ছি না। সকালে পানি দিলেই বিকেলে শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেত ভেজাতে সময় ও খরচ দুটাই বেশি লাগছে।’
কামরুল ইসলাম নামের আরেক চাষি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেশিনেও অনেক সময় পানি উঠছে না। পাটগাছের যে অবস্থা তাতে ফলন যে কেমন হবে তা ওপর আল্লাহই জানে।’
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরা পাট আবাদে কিছুটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এ তাপমাত্রায় পাটগাছের কোনো ক্ষতি হবে না। কিছুটা ক্ষতি হলেও পরবর্তী সময়ে বৃষ্টিতে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে।
তিনি আরও বলেন, জমিতে অতিরিক্ত সেচ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে তাপমাত্রায় পাটগাছের পাতা ঝলসে গেলে সেচ দেওয়া যেতে পারে। কৃষকদের আতঙ্কিত না হয়ে বৃষ্টির জন্য ধৈর্য ধরতে বলেন তিনি।
এসআর/জিকেএস