শটগান নিয়ে জমি মাপা বন্ধ করলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
গাজীপুরে শটগান নিয়ে প্রতিপক্ষকে জমি মাপে বাধা দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা। এ সময় বন্দুক তাক করে গুলি চালিয়ে প্রতিপক্ষের বুক ফুটো করে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর মহানগর সদর থানার দেশি পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী রাশেদুজ্জামান মাসুমদের সঙ্গে স্থানীয় দেশিপাড়া মৌজায় কিছু জমি নিয়ে হারুন অর রশিদদের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় হারুন ও তার স্বজনরা ওই জমি মাপজোখ করে সীমানা চিহ্নিত করতে যান। এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে শটগান নিয়ে ছুটে যান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাসুম।
এ সময় তিনি প্রতিপক্ষের হারুনকে বুকে গুলি করতে উদ্যত হয়ে মাপজোখ বন্ধ করতে বলেন। অন্যথায় গুলি করে বুক ফুটো করে দেবেন বলে হুমকি দেন। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয় আমিন মাপজোখ ফেলেই দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এক ভিডিওচিত্রে মাসুমকে লক্ষ্য করে প্রতিপক্ষের একজন নারীকে বলতে দেখা যায়, ‘আমরা রেকর্ডমূলে মালিক, তোমরা আমাদের জমিতে বাধা দেওয়ার কে?’ প্রতিউত্তরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মাসুম ওই নারীকে বলেন, ‘রেকর্ড ধূয়ে গিয়ে পানি খাও, আমাদের ১৩ পাহি জমির কোনো রেকর্ড নাই। এই জন্য আমাদের জমি ছুইটা যায় নাই।’
এদিকে ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ জানান, তাদের নানার কাছ থেকে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ১.৪২ একর জমি স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মাসুম ও তার পরিবারের লোকজন অন্যায়ভাবে দখল করে রেখেছেন। এ ব্যাপারে তারা গাজীপুর সদর সহকারী কমিশনারের (ভূমি) রাজস্ব আদালতে মিস কেস করে সম্প্রতি রায় পান। শনিবার সকালে সার্ভেয়ার নিয়ে জমিটি মাপতে গেলে মাসুম শটগান দিয়ে গুলি করে তার বুক ফুটো করে দেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি একপর্যায়ে তাকে এলোপাথারীভাবে কিলঘুষি মেরে জমি থেকে তাড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন বলেও জানান।
এ ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাশেদুজ্জামান মাসুম বলেন, আমার লাইসেন্স করা অস্ত্র আমি সঙ্গে নিয়েছিলাম। তবে হারুনকে আমি গুলি করার কোনো হুমকি দিইনি।
তিনি বলেন, ওই জমি ১৯৫২ সালে আমার দাদা ক্রয় করেছেন। পরবর্তীতে আমাদের নামে রেকর্ড না হওয়ার অজুহাতে তারা আমাদের জমির মালিকানা দাবি করছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রো সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ রাফিউল করীম বলেন, শটগান নিয়ে জমি মাপজোখের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি আমার নজরেও এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. আমিনুল ইসলাম/এফএ/এমএস