কুড়িগ্রামে কৃষকদের ঈদ উৎসব দেখতে জনতার ভিড়
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে ঈদ উৎসবে কিষাণ-কিষাণীদের নিয়ে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলা দেখতে বিভিন্ন জায়গায় থেকে এসেছে শত শত দর্শনার্থী। কৃষকদের ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যতিক্রম খেলার আয়োজন করেছে ফাইট আনটিল লাইট (ফুল) নামে একটি সামাজিক সংগঠন।
মূলত কৃষকদের ঈদ আনন্দ প্রাণবন্ত করতে এ খেলার আয়োজন করেছে সংগঠনটি। খেলা শেষে ৩৫ জন বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে হাড়িভাঙা, বালিশ খেলা, সুঁই সুতা, সাঁতার, তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে চড়া, কিষাণীদের বল খেলা, বালিশ খেলা ও যেমন খুশি তেমন সাজ, কৃষকদের স্লো সাইকেল খেলা, বেলুন ফাটানোসহ নানা রকমের খেলায় অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী শতাধিক কিষাণ-কিষাণী।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম, সাংবাদিক শফি খান, রংপুর বিভাগীয় হিসাবরক্ষক মো. সাইদুল হক, ফাইট আনটিল লাইটের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল কাদের।
খেলা দেখতে আসা ময়নাল হক বলেন, গ্রামে এসব খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১০-১৫ বছর পর গ্রামের অতীত খেলা দেখে খুবই আনন্দ পেলাম। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে কৃষকদের হাড়িভাঙা, সাইকেল খেলা দেখে। এছাড়া কিষাণীদের সুঁই সুতা খেলা ও বালিশ খেলা ছিল বেশ উপভোগ্য।
কৃষক মো. নুর ইসলাম বলেন, কৃষকদের নিয়ে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন সত্যি ভালো লেগেছে। আমরা এখানে শতাধিক কিষাণ-কিষাণী আজকের খেলায় অংশ নিয়েছি। খুব ভালো লেগেছে।
ফাইট আনটিল লাইটের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল কাদের বলেন, কৃষক হাসলে, বাংলাদেশ হাসে এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে দিনব্যাপী শতাধিক কিষাণ-কিষাণীকে নিয়ে প্রায় ২২টি খেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ খেলার মাধ্যমে সমাজে বাল্যবিয়ে বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করেছি। এছাড়া গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, কৃষকদের নিয়ে ব্যতিক্রমী এ ক্রীড়া অনুষ্ঠান সত্যি দর্শকদের মন কুড়িয়েছে। সেই সঙ্গে দর্শকরা মনোযোগী হলে এ রকম অনুষ্ঠান থেকে অনেক কিছু শেখা সম্ভব। সরকার ও সচেতন মহলের উচিত গ্রামীণ খেলাধুলাকে বাঁচিয়ে রাখতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া।
ফজলুল করিম ফারাজী এফ এফ/এমআরএম