চাঁদপুরে অর্ধশত গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের পাঁচ উপজেলার অর্ধশত গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে মানুষ। বুধবার (১০ এপ্রিল) ওই সব গ্রামের মুসল্লিরা নানা প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ঈদের নামাজ আদায় করেন। হাজীগঞ্জের পীরের অনুসারী হিসেবে ১৯২৮ সাল থেকে তার পরিবারের সদস্যরা নির্ধারিত তারিখের একদিন আগেই ঈদ উদযাপন করছেন।
মূলত বিশ্বের যেকোনো স্থানে চাঁদ দেখা যাওয়ার ভিত্তিতে চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে। বুধবার হাজীগঞ্জের সাদরা দরবার শরিফ জামে মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই ঈদ জামাতে ইমামতি করেন বর্তমান পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী।
এছাড়া হাজীগঞ্জের সাদরা দরবার শরিফ সংলগ্ন সাদরা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায় আরেকটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইমামতি করেন সাদরা দরবারের পীর মাওলানা আরিফ বিল্লাহ চৌধুরী।
ঈদের নামাজ পড়তে আসা ৯৫ বয়সী আব্দুল হামিদ বলেন, আমি জন্মের পর থেকে সাদরা দরবার শরিফে ঈদের নামাজ আদায় করছি। আমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখি, আবার চাঁদ দেখে ঈদের নামাজ আদায় করি। এভাবেই আদায় করা উচিত।
সাদরা দরবার শরিফের পীরজাদা ড. বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী জানান, সারাবিশ্বে শুক্রবারের জুম্মার নামাজ একই দিন আদায় করে, তাহলে ঈদের নামাজ কেন একসঙ্গে হবে না। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে। হানাফী, মালেকি, আম্বলি মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পৃথিবীর এক প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে সর্বপ্রান্তে তার ওপর আমল করতে হয়।
সাদরা দরবারের পীর মাওলানা আরিফ বিল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা চাঁদ দেখে ঈদের নামাজ আদায় করলাম। সরকারের কাছে দাবি জানাই যাতে দ্রুত ঘোষণা করে, সারাদেশে চাঁদ দেখে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন। আমরা চাই সত্যি ঘটনা মানুষ জানুক। চাঁদ দেখে ঈদ করা গ্রামের সংখ্যা দেশে বাড়ছে।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদরা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, জাকনী, প্রতাপপুর, বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুরের মুসল্লিরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছেন।
এছাড়া মতলব উত্তর উপজেলার সাড়ে পাঁচানী, দেওয়ানকান্দি পাঁচানী, সাতানী, লতুরদী, মোহাম্মদপুর, মোহনপুর, এখলাশপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ শাহরাস্তি উপজেলার কয়েকটি গ্রামে এক দিন আগে ঈদ উদযাপন করেন মুসল্লিরা।
শরীফুল ইসলাম/এফএ/এএসএম