দিনাজপুরে কেজিতে ৪ টাকা বেড়েছে চালের দাম
দিনাজপুরে হঠাৎ করেই চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। জেলায় সব ধরনের চালের দাম কেজিতে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ ও ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীরা।
দশদিন আগে দিনাজপুরে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। গুটি স্বর্ণ ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। আটাশ চাল ছিল ৫৪ টাকা কেজি, এখন তা ৫৮ টাকা। ঊনত্রিশ চাল ছিল ৫২ টাকা কেজি, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়।
দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় চালের বাজার বাহাদুর বাজারে খবর নিয়ে জানা যায়, সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৪ টাকা করে বেড়েছে। বস্তাপ্রতি ২৫ কেজি চালের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১২৫ টাকা। ৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত।
জেলার পাইকারি চাল ব্যবসায়ী রঞ্জিত জানান, মিলগেট থেকেই বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে তাদের। মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে এই চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছেন।
তিনি বলেন, দিনাজপুরে চালের দাম একবার বাড়লে আর কখনোই কমে না। বাজারে মনিটরিং না থাকায় চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী নিম্নআয়ের মানুষ ও ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের। মিল ও পাইকারি দোকানে নিয়মিত অভিযান চালালে বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলেও জানান তারা।
চাল কিনতে আসা তসলিম নামে এক অটোরিকশা চালক বলেন, সারাদিন অটো চালিয়ে যা আয়-রোজগার হয়, তা দিয়ে কোনোমতে টেনেটুনে সংসার চলে। হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে। বাজারে একটু সবজির দাম কমতেই চালের দাম বেড়ে গেলো।
দিনাজপুর সরকারি কলেজের ছাত্র রাসেল ইসলাম জানান, ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীরা সাধারণত মোটা চাল খেয়ে থাকে। সেই চালেরও দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা। এতে তাদের ম্যাচে খরচ বেড়ে গেছে।
দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রেজা হুমায়ন ফারুক চৌধুরী শামীম জানান, দিনাজপুরের হাট-বাজারে ধানের সরবরাহ নেই। মিল মালিকরা ধান কিনতে পারছেন না। তাই চালের দাম বেড়েছে। সামনে ইরি-বোরো ধান উঠলে চালের দাম কিছুটা কমবে। নতুন ধান না ওঠা পর্যন্ত চালের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
রমজানে হুট করেই চালের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, মজুতদাররা দাম বাড়ানোর পেছনে জড়িত।
খুচরা চাল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দাম বাড়ানোর পেছনে অবৈধ মজুতদারদের হাত রয়েছে।
পাইকারি ব্যবসায়ী এরশাদ হোসেন জানান, হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের বিক্রি অনেক কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা দোকানে অলস সময় পার করছেন।
এমদাদুল হক মিলন/এফএ/জেআইএম