কালাইয়ের রুটিতে চলে মর্জিনার সংসার
দেশজুড়েই এখন জনপ্রিয় কালাইয়ের রুটি। এ রুটি বিক্রি করেই ২২ বছর থেকে সংসার চালাচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মর্জিনা বেগম। এখনো পিছু পা হননি তিনি। প্রতিরাতে তার কাছে রুটি খেতে ভিড় জমান বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
মর্জিনা বেগমের দোকানে নেই কোনো চাকচিক্য আবার না আছে আলোর বাহার। তারপরও গ্রাহকের ভিড় লেগেই থাকে। আছে বেশ সুনামও। সন্ধ্যার পর দোকানে ভিড় জমে ওঠে ঝালপ্রেমীদের। যারা খাবারে ঝাল পছন্দ করেন তাদের কাছে মর্জিনা বেগমের ঝালভর্তা দিয়ে কালাইরুটি সবসময়ই স্পেশাল।
জেলা রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের পাশে একটি খোলা স্থঅনে প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে চুলা ও কালাইয়ের রুটির উপকরণ নিয়ে বসেন মর্জিনা। হাতে বানানো রুটি খেতে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে ভিড় করেন শহরের উঁচু দেয়ালের আড়ালে থাকা মানুষ গুলোও। সবার কাছেই তিনি মর্জিনা খালা নামেই পরিচিত।
সন্ধ্যার পরে মর্জিনার দোকানে প্রতিদিন রুটি খেতে আসেন মেহেদী হাসান সিয়াম। তিনি জানান, স্টেশনের পাশে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। খালার হাতের রুটি খুব মজা। তাই অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রম শেষ করে এখানে আসি রুটি খেতে। বলতে পারেন রাতের খাবারটা এখানেই শেষ করি।
আসাদ আহমেদ চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেলওয়ে স্টেশন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। তিনিও নিয়মতি মর্জিনা খালার দোকানের রুটি খেতে আসেন। তিনি বলেন, বাড়িতে প্রতিদিন রুটি তৈরি হয়। তবে খেতে তেমন ভাল লাগেনা। তাই প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে আসি খালার দোকানে। কারণ আমি প্রায় সারাদেশে ভ্রমণ করেছি। কিন্তু খালার বানানো কালাইয়ের রুটির মতো স্বাদ কোথাও পাইনি।
মর্জিনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, প্রায় ২২ বছর আগে মারা যান আমার স্বামী তসলিম হোসেন। এরপর সংসারে দেখা দেয় অর্থনৈতিক সংকট। কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। অনেক চিন্তা করে স্টেশনে কালাইয়ের রুটি বিক্রি শুরু করি। এখন ভালো সাড়া পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। বড় ছেলে সালেক প্রতিবন্ধী। ছোট ছেলে রাজু কখনও রিকশা চালায়, কখনও বারো ভাজা, বাদাম বিক্রি করে। এখন আল্লাহ অনেক ভালো রাখছেন। আমার প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ টি রুটি বিক্রি হয়। এতে আমার প্রায় ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়। যা দিয়েই চলছে আমার সংসার।
সোহান মাহমুদ/এনআইবি/এএসএম