ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

১০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ান ৯ শিক্ষক

জেলা প্রতিনিধি | নীলফামারী | প্রকাশিত: ০৩:০৭ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৪

নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের কাছারী লক্ষ্মীচাপ ডি.ডি এস দাখিল মাদরাসা সর্বমোট তিন শতাধিক শিক্ষার্থী থাকার দাবি করলেও সরেজমিনে পাওয়া গেছে মাত্র ১০ জন। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক আছেন ৯ জন। যদিও উপস্থিত পাওয়া গেছে ৭ জন শিক্ষককে।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ১৯৭৩ সালে এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী নিজস্ব জমি ও অর্থায়নে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮০ সালে ১১ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়ে মাদরাসটি এমপিওভুক্ত হয়। এরপর একজন শিক্ষক অবসরে যান। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী রয়েছেন।

বুধবার (৬ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পযর্ন্ত ছাত্র/ছাত্রী না থাকলেও প্রধান শিক্ষক বই তুলেছেন প্রায় ১০০ জনের। সেসব বই তুলে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

১০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ান ৯ শিক্ষক

ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত উপস্থিত ছিল ১০ জন শিক্ষার্থী। অনেক শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলোতে দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় ধুলাবালির আস্তরণ পড়ে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরাও কর্মচারীদের নিয়ে স্কুলমাঠে বসে খোশগল্পে মেতেছেন।

তবে শিক্ষার্থী না থাকলেও হাজিরা খাতায় সন্তোষজনক উপস্থিতি লিখে রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ে আড্ডায় বসে সময় কাটান শিক্ষকরা।

মাদরাসার পাশেই কুদ্দুস মিয়ার বাড়ি। তিনি বলেন, স্কুলের শিক্ষকরা প্রতিদিন স্কুলে আসেন আর চেয়ার নিয়ে মাঠে বসে পেপার পড়ে ও গল্প করে সময় পার করেন। মাঝে মধ্যে দুই চারজন শিক্ষার্থী স্কুলে এলেও তাদের ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া হয় না। শিক্ষার্থীরা দুই একটা ক্লাস করে সময় কাটিয়ে বাড়ি চলে যায়।

এলাকার সাকিব হাসান, ফরিদ, মশিউরসহ আরও অনেকে বলেন, মাদরাসাটি আগে ভালো চলতো, বর্তমান সুপারের কারণে মাদারাসাটির অবস্থা খারাপ। শিক্ষকরা মাদরাসায় এসে দু’একটি ক্লাস নিয়ে সারাদিন বসে থাকেন। দুপুর ১টা বাজলে মাদরাসা ছুটি দিয়ে বাড়ি চলে যান।

১০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ান ৯ শিক্ষক

মাদরাসার পাশের বাসিন্দা লাকু আহম্মেদ বলেন, শিক্ষকদের অবহেলায় আজ মাদরাসাটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমি মাদরাসাটির প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকেই দায়ী করবো। এছাড়া মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারীরা কীভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন, সেটা কি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেখেন না?

মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কেউ কখনোই আমাকে এ বিষয়ে অবগত করেননি। বিষয়টি আমি জানলাম এবং দেখবো।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীচাপ ডি.ডি. এস দাখিল মাদরাসা প্রধান শিক্ষক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বর্তমানে দাখিল পরীক্ষা চলার কারণে শিক্ষার্থী কম আসছে। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম। এটি উন্নত করার চেষ্টা চলছে।

বই বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বই মাদরাসায় আছে। তবে দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি।

নীলফামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আইবুল ইসলাম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের এমন বেহাল দশা, এটি আমার জানা নেই। এরইমধ্যে ইউএনও স্যার জানিয়েছেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে নীলফামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি আমি শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখবো এবং সত্যিকার অর্থেই যদি এমন হয় তাহলে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএ/জিকেএস