ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সীতাকুণ্ড

জুট মিলও নেই কোলাহলও নেই

এম মাঈন উদ্দিন | প্রকাশিত: ১২:০২ পিএম, ০৬ মার্চ ২০২৪

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী কিছু মিল-কারখানা দীর্ঘ অর্ধশত বছর ধরে সীতাকুণ্ডকে দেশে-বিদেশে শিল্পনগরীর পরিচিতি এনে দিয়েছিল। তবে সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চারটি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন সেই পরিচিতি মুছে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। সেই জুট মিলও নেই, নেই সেই চিরচেনা কোলাহলও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনাইছড়ি, কুমিরা, বাড়বকুণ্ড এবং বাঁশবাড়িয়া এলাকায় স্থাপিত চারটি পাটকল যেন এ অঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য। এ মিলগুলোতে এখন আর হুইসেল বাজে না আগের মতো। একসময় মিল এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হাজারো মুদি দোকান, রেস্তোরাঁ, হোটেল, চায়ের স্টল, সেলুনসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এখানে সেই জুটমিলও নেই, নেই কোনো কোলাহলও।

জানা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার। তারমধ্যে সীতাকুণ্ডের চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলও রয়েছে। বন্ধ হওয়ার আগে গুল আহম্মদ জুট মিলে ১৪৯৮ জন, হাফিজ জুট মিলে ২৫০৩ জন, এম এম জুট মিলে ৫৯৯ জন এবং আর আর জুট মিলে ৭২৯ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক কাজ করতেন। এখন তারা সবাই বেকার জীবন যাপন করছেন।

জুট মিলও নেই কোলাহলও নেই

বার আউলিয়া এলাকায় হাফিজ জুট মিলের পাশেই শ্রমিক কলোনি। যারা চাকরির সুবাদে পরিবার স্বজন নিয়ে ৪০-৪৫ বছর ধরে এখানেই বসবাস করে যাচ্ছেন। শ্রমিক কলোনিতে গড়ে উঠেছে কাঁচাবাজারসহ অসংখ্য দোকান পাট। কিন্তু জুট মিলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে এখন কোনো কোলাহল নেই। অনেক শ্রমিক দেশের বাড়িতে চলে যাওয়ায় দোকানপাটও বন্ধ হয়ে গেছে।

হাফিজ জুট মিলস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলছিল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে একজন করে চাকরি দেবে। অথচ আজ তার উল্টো করছে। জুটমিলগুলো বন্ধ না করে বরং কীভাবে চালালে লাভ হবে সেই চেষ্টা করা উচিত ছিল সরকারের।

জুট মিলও নেই কোলাহলও নেই

শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক বলেন, মিল বন্ধের ফলে দেশে প্রায় এক কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। সরকার লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বসিয়ে যদি খাওয়াতে পারে, আমরা শ্রমিকরা কাজ করে কেন খেতে পারবো না। আমরা কি রোহিঙ্গাদের চেয়েও পর হয়ে গেলাম?

সীতাকুণ্ড শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি ও হাফিজ জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মাহবুবুল আলম জানান, বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন (বিজেএমসি) কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের জুলাই মাসে অব্যাহত লোকসানের অজুহাতে সীতাকুণ্ডের চারটিসহ দেশের ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে। পরে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচুইটির টাকা পরিশোধ শুরু করে। এরইমধ্যে ৭০ শতাংশ শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।

এফএ/এএসএম