ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কুলে জমে উঠেছে বেলতলা বাজার

জামাল হোসেন | প্রকাশিত: ১২:৩৩ পিএম, ০৩ মার্চ ২০২৪

যশোরের শার্শা উপজেলার বেলতলা বাজারে বাণিজ্যিকভাবে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল কুলের (বরই) বাজার। আম ও কুল মৌসুমে মুখরিত হয়ে ওঠে এখানকার সব আড়তগুলো। প্রতিদিন এখান থেকে রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে রপ্তানি হচ্ছে এই মৌসুমী ফল কুল। বতর্মানে এই অঞ্চলের অর্থকারী ফসল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে কুল। কোথাও কোথাও এই ফলটি বরই নামে পরিচিত।

যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শা ও কলারোয়ার মাঠসহ আশপাশে মাঠজুড়ে চাষ হচ্ছে এই ফল। দিনে দিনে অন্য কৃষকরাও ঝুঁকছেন এই কুল চাষে।

বাজারে সুন্দরী বল কুল এখন ৭০, থাই কুল ৬০, টক কুল ৬০, চায়না কুল ৪০ এবং কাশ্মিরি কুল ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় কুলচাষি আতাউর রহমান বলেন, আমি দশ বছর ধরে কুলচাষ করছি। এ বছর আমি দশ বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছি। গত বছরও আট বিঘা কুল চাষ করেছিলাম। গত বছরের থেকে এ বছর আমার অনেক কুল হয়েছে এবং অনেক দামে কুল বিক্রি করছি। এভাবে যদি শেষ পর্যন্ত বিক্রি করতে পারি তাহলে এ বছর অনেক লাভবান হতে পারবো।

তিনি বলেন, এর আগে অন্যান্য বাজারেও কুল বিক্রি করেছি। কিন্তু বেলতলা বাজারে কুল বিক্রি করে যে লাভ করেছি অন্য কোথাও পাইনি। কারণ এখানকার আড়তদাররা সঠিক দামে এবং সঠিক ওজনে কুল বিক্রি করে এবং টাকা নিয়ে কোনো নয়-ছয় করে না।

জামালপুর থেকে আসা বেপারী পরেশ চন্দ্র সরকার ও তহিদুর রহমান বলেন, আমি ১৫ বছর যাবত আম, কুল, তরমুজ, আনারসসহ বিভিন্ন ফলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছি। সেই কারণে প্রতিবছরই বেলতলার এ ফলের মোকামে আসা হয়। এ বছর দেশে কুলের ফলন আশানুরূপভাবে অনেক বেশি। তারপরও কুলের দাম অনেক বেশি। আমরা যেমন বেশি দামে কিনছি ঠিক তেমন বেশি দামি বিক্রিও করছি। চাহিদা বেশি থাকায় আমরা কুল কিনে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছি।

বাজারের স্থানীয় আড়তদার আল-উজায়ের (সুজন), আব্দুর রাজ্জাক ও আবুল কালাম (আজাদ) জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর কুলের ফলন অনেক বেশি। সেইসঙ্গে কুলের চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় আমাদের ব্যবসা এবছর ভালো এবং চাষিরাও অনেক খুশি। আমাদের এ বাজারে চাষিরা নিঃসন্দেহে সঠিক ওজনে এবং সঠিক মূল্যে ফল বিক্রি করতে পারেন। তাই চাষিরা এ বাজারে কুল বিক্রি করতে আসেন। এই বাজারে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কুল কেনাবেচা হয়ে থাকে।

বেলতলা বাজারের ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি লোকমান হোসেন জানান, চাষি ও ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারে এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা কামনা করছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর যেমন অনেক কুল চাষ হয়েছে তেমনি চাষিরা অনেক বেশি লাভবানও হয়েছে। ঠিক এভাবে যদি আরও ২-১ বছর যায় আমি আশাবাদী বেলতলা বাজার বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে বিখ্যাত (আম বাজার) হিসেবে যে একটা খ্যাতি অর্জন করেছে ঠিক তেমনি কুল বাজার হিসেবেও একটা পরিচিতি লাভ করবে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা জানান, এ বছর মোট ৭০ হেক্টর জমিতে ৩০০ জন চাষি কুল চাষ করেছেন। বেলতলা বাজার পরিদর্শন করে আমি যেটা দেখলাম হাতেগোনা কিছু জাত যেমন বল সুন্দরী, থাই, আপেল, চায়না, টক কুলগুলোই এ বছর চাষিরা বেশি চাষ করেছেন এবং তারা লাভবানও হয়েছেন। তাই তারা আগামী বছরেও এই লাভজনক ফল কুল চাষ করবেন।

এফএ/এএসএম