ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

আধুনিকায়নে বদলে যাচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দরের চেহারা

জামাল হোসেন | বেনাপোল (যশোর) | প্রকাশিত: ১০:০৯ এএম, ০১ মার্চ ২০২৪

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সহজ হয়েছে। এ বন্দর দিয়ে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী চলাচলও বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু বন্দরের পুরনো অবকাঠামোতে বিঘ্নিত হচ্ছিল পণ্য পরিবহন। তাই দুই দেশের বাণিজ্যে আরও গতি আনতে স্থলবন্দরে নির্মাণ করা হচ্ছে আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল। নতুন নতুন অবকাঠামো নির্মাণে বেনাপোল বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়ছে।

দেশের সর্ববৃহৎ এ স্থলবন্দরে ২৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে বৃহত্তম ভেহিকেল ট্রাক টার্মিনাল। বন্দরের আধুনিকায়নে ২৪ একর জমির ওপর এ টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হলে এখানে একসঙ্গে ১২০০ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়াতে পারবে।

বেনাপোল স্থলবন্দরে অনুন্নত অবকাঠামোর কারণে রাজস্ব আয় এবং আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে নানা প্রতিবন্ধকতা চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। তবে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য আরও সহজ করবে ও বদলে দেবে বেনাপোল স্থলবন্দরের চেহারা, এমনটাই আশা করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।

আধুনিকায়নে বদলে যাচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দরের চেহারা

বেনাপোল স্থলবন্দর বর্তমানে ১২৭ একর জমির ওপর নির্মিত। এখানে ৫০টি শেড ও ইয়ার্ড রয়েছে। এসব শেড ও ইয়ার্ডে পণ্য রাখার ধারণক্ষমতা মাত্র ৫০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু ভারত থেকে প্রতিদিন যে পণ্য আমদানি হয় তার পরিমাণ দৈনিক প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আসে। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। গেলো ১৫ বছরে বন্দর আধুনিকায়নে সরকারি ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ব্যয় করা হয় ৬৮৫ কোটি টাকা। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ২৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল। ঢাকার এস এস আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এই কার্গো ভেহিকেল ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করে। যেটির কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এর নির্মাণ কাজ শেষ হলে একসঙ্গে ১২০০ ট্রাক পার্কিং করতে পারবে। এছাড়া ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১ একর জমি অধিগ্রহণ, ১৯৩ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক বাস ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, ৩০ কোটি টাকার জায়গা অধিগ্রহণ, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা, ৩৯ কোটি টাকার সুউচ্চ বাউন্ডারি ওয়াল, ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে স্টাফ ডরমিটোরি ভবন এবং ১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় পণ্য পরিমাপের দুইটি স্কেল রয়েছে এই উন্নয়নের মাঝে। এসব অবকাঠামো ও অটোমেশন সুবিধায় এরইমধ্যে রাজস্ব ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি বেড়েছে বন্দরে।

বন্দরের পরিসংখ্যান মতে, ২০১১-১২ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ১২ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯৯ টন।

আধুনিকায়নে বদলে যাচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দরের চেহারা

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএসআর’র জিএম মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন জানান, কার্গো ভেহিকেল ট্রাক টার্মিনালের নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের জুন নাগাদ শেষ হবে। তখন বদলে যাবে বন্দরের চিত্র।

জানতে চাইলে বন্দরের প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান আলী জানান, বন্দরে এরইমধ্যে সুউচ্চ বাউন্ডারি ওয়াল, স্টাফ ডরমিটোরি ভবন এবং পণ্য পরিমাপের দুটি স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। এসব কাজ শেষ হলে বন্দরের সক্ষমতা ও রাজস্ব আয় দুটোই বাড়বে। বন্দরের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য আরও সহজ করবে।

এ বিষয়ে বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, গত ১৫ বছরে বন্দর আধুনিকায়নে সরকারি ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৬৮৫ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ করা হয়েছে। সরকার আন্তরিক হওয়ায় এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে এসব অবকাঠামোগত উন্নয়ন অধিকাংশ শেষ হয়েছে, কিছু চলমান আছে। ২৪ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন ভেহিকেল ট্রাক টার্মিনালের কাজ আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। টার্মিনালটি চালু হলে বেনাপোল বন্দরে কোনো যানজট থাকবে না।

এফএ/এমএস