মিরসরাইয়ে আবারও অস্থির পেঁয়াজ বাজার, প্রতিকেজি ১৩০
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন ক্রেতারা।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজের অভাবে অস্থির বাজারে স্বস্তির দেশী মুড়িকাটা পেঁয়াজ এখন প্রায় শেষ। এ অজুহাতে পাইকারি বাজারে একলাফে দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
পাইকাররা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। বাইরে থেকেও পেঁয়াজ আসছে না। সবমিলিয়ে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, ফলে দাম বাড়ছে। দুয়েক দিনের মধ্যে সরবরাহ না বাড়লে পেঁয়াজের বাজার আরও অস্থির হতে পারে।
কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, ‘পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ (মুড়িকাটা) এখন শেষের দিকে। সে কারণে এসব পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। তাই দামও বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য অবশ্যই আমদানি করতে হবে। সামনে রমজানকে কেন্দ্র করে পেঁয়াজ আমদানি না হয় তাহলে দাম আরও বাড়বে। দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে এসেছে। যা আছে তাতে কাভার করা সম্ভব না। পেঁয়াজের সংকট আছে।’
সেলিম উদ্দিন নামে পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমানে মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। সামনে রমজান। এ সময় সরকারিভাবে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। কিছু পেঁয়াজ আমদানি না করলে সংকট দেখা দেবে। লাফিয়ে বাড়বে পেঁয়াজের দাম।’
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কোনো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে খুচরা বাজারেও তার প্রভাব পড়বে।
দ্বীন মোহাম্মদ নামে বড়তাকিয়া বাজারের এক খুচরা ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতেও মুড়িকাটা পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১০০ টাকায় বিক্রি করেছি। তবে শনিবার দাম বেড়েছে। ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।’
কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানের বাড়তি দামে বিক্রির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়েছে তাই আমাদের বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের কেনা দাম হিসাব করতে হয়। সেই দাম হিসাব করেই আমরা বিক্রি করি।’
মিঠাছড়া বাজারে আসা ক্রেতা বেলাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। কেউ দেখার নেই। আলুর দাম কমলেও এখন কেজিতে পেঁয়াজের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন।’
মিরসরাই পৗর সদরে বাজারে ক্রেতা মেজবাউল আলম বলেন,‘এমনিতে সব জিনিসের দাম বেশি। তার সঙ্গে পেঁয়াজের দাম আরও বেড়েছে। যত কষ্ট নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্তের। সীমিত আয়ে পরিবার নিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
বড়দারোগাহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফিরোজ বলেন, ‘এখন তো মুড়িকাটা পেঁয়াজ শেষ পর্যায়ে। আমদানিও নেই। পেঁয়াজের দাম ভারতেও বেশি, এখানেও বেশি। এখন দেশি ১২০ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ১৩০ টাকা।’
করেরহাট বাজার কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘কৃষকদের কাছে আর পেঁয়াজ নেই। তাদের পেঁয়াজ তোলা শেষ। এখন দাম বেড়েছে। সামনে পেঁয়াজের চাহিদা আরও বাড়বে। যদি এর মধ্যে পেঁয়াজ আমদানি না হয় তাহলে দাম আরও বাড়তে পারে।’
এম মাঈন উদ্দিন/এনআইবি/এমএস