ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

গ্রীন অরণ্য পার্ক

ঘুরতে এসে হামলার শিকার পরিবার, ভিডিও ভাইরাল

জেলা প্রতিনিধি | ময়মনসিংহ | প্রকাশিত: ০৮:১৫ পিএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ময়মনসিংহের ভালুকায় গ্রীন অরণ্য পার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে গিয়ে পার্ক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হামলার শিকার হয়েছে এক পরিবার। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের গ্রীন অরণ্য বিনোদন কেন্দ্রে (পার্ক) এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহজাহান মিয়া বাদী ওইদিন রাতেই ভালুকা মডেল থানায় অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়।

মামলার পর বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে হবিরবাড়ি এলাকা থেকে হামলায় জড়িত গ্রীন অরণ্য পার্কের তিন কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে গ্রীন অরণ্য পার্কে স্ত্রী ফাতেমা আক্তার নিশি, মেয়ে আফরা (৪), বোন জহুরা খাতুন, হাফিজা, তাছনিম, ভাগনি সুমাইয়া (৭) ও আজমিনাকে (৭) গাড়িতে করে ঘুরতে আসেন শাহজাহান মিয়া। পার্ক এলাকায় গাড়ি রেখে টিকিট কেটে প্রত্যেকেই পার্কের ভেতরে প্রবেশ করেন। ঘোরাফেরার একপর্যায়ে শাহজাহান মিয়ার পরিবারের লোকজন পার্কে থাকা সুইং রাইডে চরার জন্য পাঁচটি টিকিট সংগ্রহ করেন। কিন্তু অব্যবস্থাপনার কারণে রাইডে চড়তে পারেননি তারা। বিষয়টি রাইডের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে বারবার অনুরোধ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজাহান মিয়াতে গালিগালাজ শুরু করেন। এর প্রতিবাদ করার সঙ্গে সঙ্গে সুইং রাইডের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি শাহজাহান মিয়াকে থাপ্পড় মারেন এবং প্যান্টের ডান পকেটে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।

jagonews24

এসময় স্ত্রী, বোন ও পার্কে থাকা দর্শনার্থীরা সুইং রাইডের ব্যক্তির অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করলে শাহজাহানের প্রতি আরও ক্ষিপ্ত হন। তিনি শাহজাহানের সঙ্গে থাকা স্ত্রী, বোন, কন্যা ও ভাগনিদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে শাহজাহান মিয়া পার্কে আসা লোকজনের সহায়তায় বের হতে চাইলে সুইং রাইডের ব্যক্তিসহ পার্কে নিয়োজিত থাকা ১৫-২০ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শাহজাহান মিয়ার পথরোধ করেন। এসময় শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি ও লাথি মারা হয়। এসময় নারীদের শ্লীলতাহানি ও শাহজাহান মিয়ার গলায় থাকা একটি সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন। গাড়ি ভাঙচুর করায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পার্ক থেকে বের হয়ে আসে শাহজাহানের পরিবার।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, শাহজাহান মিয়া পরিবার-পরিজন নিয়ে পার্ক থেকে বের হয়ে আসার সময় পার্কের লোকজন তার গাড়ির গতিরোধ করে হামলা করেন। এসময় গাড়িতে থাকা শাহজাহান বারবার অনুরোধ করলেও তাকে মারতে যান পার্কের লোকজন। এসময় গাড়িতে থাকা নারী-শিশুরা ভয়ে কান্না করতে থাকেন। বাঁচানোর আকুতি জানান শাহজাহানও।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘আমি বারবার তাদের অনুরোধ করে বলেছি, আমার সঙ্গে নারী ও শিশু আছে। তারা ভয়ে কান্নাকাটি করছে। কিন্তু তারা কোনো কিছুই মানেনি। আমার গাড়িতে লাথি মেরেছে, লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। এতে আমার শিশু মেয়ে ভয় পেয়েছে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আমি পার্ক থেকে বের হয়ে আসি।’

তবে গ্রীন অরণ্য পার্কের ম্যানেজার জাহিদ হাসান সাগর বলেন, শাহজাহান মিয়া নামের ওই যুবক সুয়িং রাইডে গিয়ে সিরিয়াল অভারটেক করতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। পরে ওই দর্শনার্থী রাইডে কর্তব্যরত ব্যাক্তিকে চড়থাপ্পড় মেরে গায়ের কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। পরে সুয়িং রাইডের ক্যাশ কাউন্টারে ঢুকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে পার্ক থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে ভিডিও করা শুরু করে। এসময় তার মোবাইলের ভিডিও ডিলিট ও সুইং রাইডারের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে গাড়ি থেকে নামতে বলা হয়। কিন্তু কোনোমতেই তিনি গাড়ি থেকে নামেননি, ভিডিও করছিলেন।

তিনি আরও বলেন, তাদের ওপর কোনো নির্যাতন করা হয়নি। ভাইরাল ভিডিওতে যা দেখা গেছে, তা সবই শাহজাহান মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনের অভিনয়।

পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকায় হাসান চৌধুরী, আতিয়ার রহমান ও আবু নাঈম নামের তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/এমএস