সিজারিয়ান অপারেশনের ৫ দিন পর প্রসূতির মৃত্যু
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার লিজা হেলথ কেয়ার নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের পাঁচদিন পর প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়।
নিহত নারীর নাম রেহেনা বেগম (৩৫)। তিনি পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের মাঝাইল গ্রামের ওয়াজকুরুনী বিশ্বাসের স্ত্রী।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্র জানায়, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য রেহেনা বেগমকে লিজা হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ওই নারী একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। পরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনিত হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রেহেনা বেগম।
স্বজনরা জানান, লিজা হেলথ কেয়ারে রেহেনা বেগমের দুইবার অপারেশন করা হয়েছে। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জানতে পারেন, অপারেশনের সময় তার প্রস্রাবনালী কেটে ফেলা হয়েছে।
নিহত রেহেনা বেগমের স্বামী ওয়াজকুরুনী বিশ্বাস বলেন, তিনি স্ত্রীর মরদেহ নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময় তার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুনা বিশ্বাস তাকে ফোন করে লিজা হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ডেকে নেয়। তিনি বলেন, তার ছেলের ভবিষ্যতের জন্য পরে সহযোগিতা করবেন। এ বিষয়ে তার কোনো অভিযোগ নেই।
এ বিষয়ে পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রব মুনা বিশ্বাস বলেন, ওই নারীর স্বামী তাকে বলেছেন, তারা ক্লিনিকে দেনা আছেন। সেগুলো মওকুফ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। যে কারণে তিনি ক্লিনিকে গিয়েছিলেন। তবে কাউকে কোনো সহযোগিতার আশ্বাস তিনি দেননি।
লিজা হেলথ কেয়ারের ম্যানেজার অরুণ কুমার বলেন, নিহত ওই নারীর সিজারিয়ান অপারেশন তাদের ক্লিনিকে হয়েছে। তবে এ অপারেশনের বিষয়ে ডা. শাহজাহান এস সোয়েব ভালো বলতে পারবেন।
এ ঘটনার পর থেকে ডা. শাহজাহান এস সোয়েব পলাতক। এজন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগই পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শারমিন আহম্মেদ তিথি বলেন, বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। কিন্তু কোনো অভিযোগ পাইনি।
রুবেলুর রহমান/এসআর/এএসএম