ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রোজার আগেই বাড়ছে ছোলা-মটর ডালের দাম

জেলা প্রতিনিধি | সিলেট | প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪

রমজান শুরুর বাকি আরও দুই মাস। এরমধ্যেই অস্থির সিলেটের নিত্যপণ্যের বাজার। প্রতিদিনই বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের দাম। পাইকারি বাজারে এক থেকে দুই টাকা করে দাম বাড়লেও খুচরা বাজারে বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো পণ্যের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। ফলে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সিলেট নগরীর কালিঘাট ও বন্দরবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতারা জানান, রোজার আগেই সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ে। তবে এবার আমদানি নির্ভর সব পণ্যের দাম আগে থেকেই বাড়তে শুরু করেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা। প্রতি কেজি ছোলা মানভেদে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯৬ টাকা পর্যন্ত। আর খুচরা বাজারে সেটি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।

মটর ডাল গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছিল ৬২ টাকায়। এ সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ টাকায়। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৬৬ থেকে ৭০ টাকায়। এ সপ্তাহে খুচরা বাজারে মটর ডাল প্রতি কেজি ৭৮ থেকে ৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি মটর ডালের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

এছাড়া দাম বেড়েছে আটা, ময়দা, মসুর ডাল, মুগডাল, তেল, পেঁয়াজ ও রসুনসহ নিত্যপণ্যের।

প্রতিকেজি খোলা আটা ৫০ ও প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। আর কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়ে খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৭০ এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি মসুর ডাল ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০৪ থেকে ১০৫ টাকায়। কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়ে মানভেদে মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকায়।

এছাড়া পাইকারী বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৭০ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম ৮০ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকা।

নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকার চাইলে রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে পারে। এজন্য দরকার কেবল কঠোর নজরদারি। সঠিক নজরদারির অভাবে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত দাম বাড়ায়।

কাজলশাহ এলাকার জাকারিয়া হোসেন বলেন, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পণ্যের দাম। পাইকারি বাজারে এক-দুই টাকা বাড়লে খুচরা বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়ে। কোথাও ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত দামের পার্থক্য থাকে।

তিনি আরও বলেন, পাইকারি বাজারে মাঝে মধ্যে অভিযান হলেও খুচরা বাজারে মনিটরিং কম হয়। যার প্রভাব পড়ে আমাদের উপর। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে পণ্য কিনতে হয়। রোজার আগে যাতে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজর রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সিলেট নগরীর কালিঘাট এলাকার পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমিন এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী শাহেদ আহমদ বলেন, প্রতিদিনই এক থেকে দুই টাকা করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। কোনো কোনো পণ্যের দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মটর ডালের দাম।

তিনি বলেন, আমাদের কাছ থেকে কেনার পর খুচরা বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ে ৫ থেকে ১০ টাকা করে। আর পাড়া মহল্লা পর্যন্ত পৌঁছালে দামের পার্থক্য থাকে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত। দাম চাইলেও আমরা কমাতে পারি না। আড়ৎদাররা প্রতিদিনই পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। আর কিছু কিছু পণ্যের দাম আগে থেকেই চড়া রয়েছে। কোনো পণ্যই স্থিতিশীল নয় বলে জানান তিনি।

একই এলাকার আমিন ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মাসুদ আহমদ জানান, আমদানি নির্ভর সব পণ্যের দাম বাড়ছে। ছোলার দাম এক থেকে দুই টাকা করে বাড়লেও মটর ডালের দাম বাড়ছে বেশি। এছাড়া মুগডালের দামও বাড়ছে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সিলেটের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) শ্যামল পুরকায়স্থ বলেন, নিত্যপণ্য নিয়ন্ত্রণে অভিযানের ব্যাপারে এখন কিছুই বলা যাবে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা আসলে অভিযান হবে, তখন জানানো হবে।

আহমেদ জামিল/এএইচ/জেআইএম