ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ভূলা চিংড়ির জালে ফেঁসে হুমকিতে বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য

আব্দুস সালাম আরিফ | প্রকাশিত: ০৯:২৯ এএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪

বঙ্গোপসাগরে অবাধে শিকার করা হচ্ছে ছোট চিংড়ি, যা পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলে স্থানীয়ভাবে ভূলা চিংড়ি হিসেবে পরিচিত। তবে ছোট প্রজাতির এই চিংড়ি শিকার করতে গিয়ে অন্যান্য মাছের পোনাও মারা পড়ছে। অবাধে এই মাছ শিকার চলতে থাকলে তা সাগরের জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন মৎস্য খাতের গবেষকরা।

প্রতি বছর শীতের শুরুতে হাজার হাজার ট্রলার বিশেষ এক ধরনের জাল নিয়ে ছোট জাতের চিংড়ি শিকার করা হয়। ছোট ফাঁসের নেট ব্যবহার করে অবাধে শিকার করা এসব চিংড়ি সাধারণত শুটকি করা হয়। তবে এই মাছ শিকার করতে যে জাল ব্যবহার করা হয় তাতে অন্যান্য মাছের পোনাও মারা পড়ছে।

সম্প্রতি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী, গলাচিপা, কুয়াকাটাসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা সাগর থেকে যে ভূলা চিংড়ি শিকার করে নিয়ে আসছেন তার সঙ্গে ইলিশ, পোয়া, ছুরি, বাইলা, লইট্যা, ফাইসা, চন্দনা ইলিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর বাচ্চাও আটকা পড়েছে ও মারা গেছে। পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আলীপুর ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তে ব্রিজের দুই পাশেই এসব ভূলা চিংড়ি রোদে শুকিয়ে শুটকি তৈরি করতে দেখা যায়। এসব চিংড়ির মধ্যে অন্যান্য মাছের পোনাও রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির কাকড়াসহ জলজ প্রাণীও দেখা যায়।

এ বিষয়ে জানতে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভূলা চিংড়ি শিকারের নামে সাগর থেকে নির্দিষ্ট একটি জাতের মাছ এভাবে অবাধে শিকারের ফলে মাছের খাদ্য শৃঙ্খলে একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ সাগরে বিভিন্ন মাছ ও জলজ প্রাণী বসবাস করে। এসব প্রাণীর খাদ্যের সংস্থান একটি চক্র অনুসরণ করে হয়। কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রজাতি এভাবে তুলে নিলে তা অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়া এই মাছের সঙ্গে অন্যান্য মাছের পোনাও ধরা পড়ছে, যার ফলে মাছ শিকারের এই প্রক্রিয়াটি নিয়ে আরও গবেষণা করা প্রয়োজন।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এ মাছটি দেশের আমিষ উৎপাদনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এটি সাধারণত ভর্তা হিসেবে মানুষ খেয়ে থাকে। এছাড়া শুটকি তৈরি ও মাছ, মুরগি, গবাদী পশুর খাবার তৈরিতেও এটি বেশ জনপ্রিয় একটি উপাদান। এটি শিকার করার বৈধতা কিংবা ঝুঁকির বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও গবেষণা করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এফএ/এএসএম