মতবিনিময় সভায় চুন্নু
‘আ’লীগ নেতাকর্মীদের পলিটিক্সটা বোঝা উচিত, না বুঝলে তারা মূর্খ’
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার বাবার মার্কা নৌকা। উনার বাবা ৭০ সালে এই নৌকা নিয়ে ইলেকশন করেছেন। পরে শেখ হাসিনা তার এত প্রিয় মার্কাটা এখান থাইকা ছাড়তে হইছে কলম দিয়া। এটা নিশ্চয়ই ওনার কোনো প্রয়োজন আছে বলেই ছেড়েছেন। এ বিষয়টা যদি আওয়ামী লীগের লোকেরা না বুঝে। তাদের এই কারণটা, পলিটিক্সটা বোঝা উচিত, তাদের দলকে সহযোগিতা কে কতটুকু করছে, কিভাবে হচ্ছে, যদি না বোঝে তাহলে তারা মূর্খ।’
মুজিবুল হক চুন্নু শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে তার নিজ গ্রাম কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামে সর্বস্তরের জনসাধারণকে নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রয়োজন আছে বলেই এখানে (করিমগঞ্জ-তাড়াইলে) তাকে নৌকা ছাড়তে হয়েছে। নিশ্চয়ই একটা কিছু গুরুত্ব আছে, নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে।’
তবে আওয়ামী লীগের লোকেরা বিষয়টি বুঝতে পারছে না উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, ‘বুঝবে, বুঝবে নিশ্চয় খুব তাড়াতাড়ি বুঝবে। তবে যাদের ব্যক্তি স্বার্থ আছে তারা কখনোই বুঝবে না।’
আওয়ামী লীগ কর্মীদের উদ্দেশে চুন্নু বলেন, ‘এখন নির্বাচন আসছে, অনেক আওয়ামী লীগের ভাইয়েরা আপনারা যারা দলে আছেন, আপনাদেরকে বলবো আমি নির্বাচনে এমপি হলে একটা কিছু হয়ে গেলাম, তা না। মন্ত্রী হইলে কিছু হয়ে গেলাম তা না। এগুলো আমার জন্য পুরানো।'
মুজিবুল হক বলেন, ‘মন্ত্রীত্বের প্রতি আমার এত খায়েশ নেই। আমি এমপি হইলে মানুষের জন্য কথা বলতে পারি এটা আমার সবচেয়ে ভালো লাগে। পার্লামেন্টে কথা বলা, এগুলো আমি পারি। পারার মতো জ্ঞান বুদ্ধি আল্লাহ আমারে যথেষ্ট দিছেন।’
জাপার মহাসচিব আরও বলেন, ‘রাজনীতি করলে মানুষের জন্য কথা বলা যায়, চুরিও করা যায়, খারাপও করা যায়, ভালোও করা যায়। যে যেটা করে। কিন্তু রাজনীতি করলে মানুষের ভালো করতে গেলে অনেক কিছু করা যায়। মানুষের জন্য ফাইট করা যায়, মানুষের দাবি নিয়ে দেশে-বিদেশে সে দাবিকে প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ যারা আছেন তাদের কানে পৌঁছানো যায়। আমি এজন্য রাজনীতি করি।’
কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে লাঙ্গল প্রতীককে ছাড় দিয়ে নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদের মনোনয়ন তুলে নেয় আওয়ামী লীগ। আসনটিতে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
আসন সমঝোতায় নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদকে সরে দাঁড়াতে হলেও মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের চার স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচারে সক্রিয় রয়েছেন। নৌকার ছাড়ের পরও ভোটের মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন স্বতন্ত্ররা। আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংককে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন তারা। এছাড়া চার স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে সমঝোতার চেষ্টাও শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। এ পরিস্থিতিতে এবার জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু'র নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সহজ হবে না বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।
সাধারণ ভোটারেরা মনে করছেন, কৌশল করে নৌকাকে নির্বাচনের মাঠ থেকে দূরে রাখলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চুন্নুর জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাড়াতে পারেন। তাই কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে হতে পারে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে।
এসকে রাসেল/এনআইবি/জেআইএম