নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২২
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন উপলক্ষে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্রে করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ২৫ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার যদুনন্দী বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়ার পক্ষে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারী মো. কাইয়ুম মোল্যা। এরপর থেকে বাজারে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
এর জের ধরে সোমবার সকালে যদুনন্দী বাজারে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারী কাইয়ুম মোল্যা ও সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্যা ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি খন্দকার সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থকদের কথা কাটাকাটি হয়।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের অন্তত পাঁচ শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া। একপর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা পিছু হটে। এতে পুলিশের পাঁচ সদস্যসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ২২ জন আহত হন। আহতদের ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুকসুদপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে নৌকা মার্কার প্রার্থীর অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্যা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সকালে যদুনন্দী নবকাম কলেজের ভেতর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় কাইয়ুম মোল্যা ও তার লোকজন। পরে আমাদের লোকদের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ বাধে। এতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী কাইয়ুম মোল্যা বলেন, সকাল ৬টার দিকে আমাদের সমর্থক টুকু ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য তাদের চাপ দেয় ও ভয়ভীতি দেখায় আব্দুর রব মোল্যা ও খন্দকার সাজ্জাদ। পরে জাহাঙ্গীর যদুনন্দী বাজারে এলে তাকে ধরে জুতা দিয়ে পেটান খন্দকার সাজ্জাদ। এ নিয়ে পরে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ বেধে যায়। এ ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পরিমল কুমার বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে এসআই শরিফুল ইসলাম, আবু রায়হান নূর, আব্দুল হালিম, কনস্টেবল রাজু হোসাইন ও বাবু মিয়া আহত হয়েছেন। এখন এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৮টি ঢাল ও কয়েকটি লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।
এন কে বি নয়ন/এফএ/এমএস