ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মুহূর্তে পেঁয়াজে টইটম্বুর পাবনার হাট, দাম কমলো দুই হাজার

আমিন ইসলাম জুয়েল | পাবনা | প্রকাশিত: ০৪:০০ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩

পাবনায় পেঁয়াজের পাইকারি হাট বনগ্রামে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি মণ ৯ হাজার টাকায়। তবে পেঁয়াজের বাড়তি দরের কথা শুনে চাষি ও বাধাইকারকরা আমদানি বাড়িয়ে দেওয়ায় দুই ঘণ্টার ব্যবধানে মণপ্রতি দুই হাজার টাকা কমে যায় পেঁয়াজের দাম। নতুন মূলকাটা বা মুড়ি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ পাঁচ-ছয় হাজার টাকায়।

শনিবার সকালে হাটে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজের সরবরাহ কম। এর কারণ হিসেবে চাষিরা জানান, গত তিনদিনের বৃষ্টি। বৃষ্টির জন্য ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে পারেননি চাষিরা। এতে হাটে পেঁয়াজ কম থাকায় চাষি ও বাধাইকারকরা দাম বাড়িয়ে দেন। সকাল ৭টার দিকে ব্যাপারীরা প্রতি মণ পেঁয়াজ কেনেন ৯ হাজার টাকায়। এরপর পেঁয়াজের সরবরাহ দ্রুত বাড়তে থাকে। তবে ব্যাপারীরা তখন দর কমিয়ে দেন। সকাল ৯টার দিকে পুরোনো পেঁয়াজ (হালি পেঁয়াজ) বিক্রি হয় সাত হাজার টাকায়। নতুন মূলকাটা বা মুড়ি পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি মণ পাঁচ-ছয় হাজার টাকায়।

স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোরে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা শুনে চাষি ও বাধাইকারকরা গাড়ি ভরে পেঁয়াজ আনেন হাটে। এতে দ্রুত পেঁয়াজে হাট ভরে যায়। তখন ব্যাপারীরা দাম কমিয়ে দেন।

jagonews24

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতেগোনা কিছু চাষি ও বাধাইকারকদের ঘরে এখনও ভালো পরিমাণ পুরোনো পেঁয়াজ মজুত আছে। এরই মধ্যে কিছু মুড়ি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। বেশি দামের আশায় বাধাইকারকরা অল্প অল্প করে পেঁয়াজ হাটে নেন। তবে মুড়ি বা মূলকাটা পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে উঠলে পুরোনো পেঁয়াজের দাম কমবে।

অনেক পেঁয়াজচাষি জানিয়েছেন, এখন বাজারে পেঁয়াজের যে দাম তাতে তারা খুশি। তবে তারা বলছেন, এখন দাম বাড়লেও ওজন কমে গেছে ও প্রচুর পেঁয়াজ পচে গেছে।

বনগ্রাম হাটে আসা চাষি জসীম উদ্দিন জানান, এরকম দাম সারা বছর থাকা দরকার। কারণ বেশিরভাগ চাষি আগেই পেঁয়াজ বিক্রি করেন। তবে যারা পেঁয়াজ কিনে মজুত করেছিলেন সেসব মধ্যস্বত্বভোগীদের এখন পোয়াবারো।

পাবনার চাষি সংগঠক শাহজাহান আলী বাদশা জানান, সাধারণ চাষিদের লাভবান করতে হলে মৌসুমেও ভালো দাম নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা তা অনেকাংশে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে চলে যায়।

jagonews24

বনগ্রাম হাটের কয়েকজন ব্যাপারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটে আমদানি কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বেশি। তারা ইচ্ছা করে দাম বাড়াতে পারেন না। এটা চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। তবে তারা আশা করছেন মূলকাটা বা মুড়ি পেঁয়াজের মৌসুম পুরোদমে শুরু হলে দাম কমবে।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পাবনা জেলায় এ বছর ৮ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে কন্দ বা মূলকাটা পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৫ হেক্টর। গত বছর চাষিরা পেঁয়াজ চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা সরিষা চাষে বেশি ঝুঁকে পড়েছিলেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর পাবনার উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন জানান, এবার আবহাওয়া ভালো। মাঠকর্মীরা চাষিদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

তিনি জানান, পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনও বাড়ছে। চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে তারা আশাবাদী।

এফএ/এমএস