ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ময়মনসিংহে অবরোধ

‘কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবে না’

মঞ্জুরুল ইসলাম | ময়মনসিংহ | প্রকাশিত: ০৬:৫১ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২৩

সেলিম মিয়া ও স্বাধীন মিয়া পেশায় ধান কাটার শ্রমিক। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে ধান কাটতে তারা ভালুকা উপজেলার সিডস্টোর এলাকার বাটাজোড় এলাকায় যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় সেলিম মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অন্যের জমিতে কাজ করে আমাদের সংসার চলে। আমরা টেলিভিশনে প্রতিদিন দেখি বাসে আগুন দেয়, ককটেল মারে। এসবের ভয়ে কাজ না করলে তো পরিবারের সদস্যদের পেটে ভাত জুটবে না। মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পেটের দায়ে কাজ করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছি। আমাদের মতো খেটে মানুষের কাজ করা ছাড়া উপায় নেই।

এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ময়মনসিংহ নগরীর শম্ভুগঞ্জ মোড়, পাটগুদাম ব্রিজ মোড় ও মাসকান্দা বাস টার্মিনালে ঘুরে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে রয়েছে পুলিশের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। তবে যাত্রীর চাপ কম থাকায় সীমিত সংখক দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে সিএনজি, থ্রি-হুইলার, অটোরিকশার চাপ ছিল বেশি।

‘কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবে না’

নেত্রকোনার পূর্বধলার বাসিন্দা হিমেল মিয়া পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। তিনি বলেন, পেটে ক্ষুধা থাকলে দুনিয়া অন্ধকার। কিসের আগুন, কিসের ঝড়, কাজেতো যেতেই হবে। তবে আমরা সাধারণ মানুষ দেশে অশান্তি নয় শান্তি চাই।

শেরপুর-ঢাকা রুটের তোয়া-তন্নী বাসের চালক নুর মোহাম্মদ বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। আমার সংসার আছে, পরিবার আছে, আমাদের কাজ করে খেতে হয়। কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবে না। তবে বাস চালালে আগুনের ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিদিন শুনি বাসে আগুন দিচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি হয়। হরতাল অবরোধ না থাকলে এসবের ঝুঁকি থাকে না।

শেরপুর-ঝিনাইগাতি-ঢাকা রুটের একটি বাসের মালিক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, অনেকেই আছেন ঋণ করে বাস কিনেছেন। বাসটি তার সন্তানের মতো। রাস্তায় পেট্রোল বোমা ও ককটেলের ভয়ে অনেকে গাড়ি বের করছে না। আমরা যারা আছি, বাস বসিয়ে রাখলে অনেক ক্ষতি হয়। বাসের চালক-হেলপার আছে, তারা পরিবার নিয়ে বিপদে পড়ে। সব দিক চিন্তা করে আমাদের কিছু কিছু গাড়ি বের করছি। তবে আমাদের দাবি একটাই, আমরা হরতাল বা অবরোধ যাই হোক, এসব প্রত্যাহার চাই।

‘কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবে না’

মাসকান্দা বাস টার্মিনালের এনা পরিবহনের মাস্টার বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২৯টি গাড়ি ছেড়ে গেছে। অবরোধ না থাকলে শতাধিকের বেশি গাড়ি ছেড়ে যেত। যাত্রী কম থাকায় প্রতি বাসে ২০ থেকে ২২ জন করে যাত্রী দিয়ে সময়মতো গাড়ি ছাড়তে হচ্ছে। এতে কোম্পানির অনেক লোকসান হচ্ছে। তবে প্রথম দফায় অবরোধের প্রভাব যাত্রীদের মাঝে যেমন ছিল এখন তা অনেক কমে আসছে। যাত্রীও আগের চাইতে বাড়ছে।

পাটগুদাম ব্রিজ মোড় বাসস্টেশন শ্রমিক ইউনিয়ন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবু তাহের বলেন, স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ ভাগের দুই ভাগ যাত্রী আছে। পর্যাপ্ত গাড়ি আছে কিন্তু যাত্রী কম। যাত্রী আসলে গাড়ি চলছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টাকাগামী ২০টি গাড়ি ছেড়ে গেছে। হরতাল অবরোধ না থাকলে দেড়শো থেকে দুইশো বাস ছেড়ে যেত।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বলেন, নগরীর বাস টার্মিনাল ছাড়াও প্রতি মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তাছাড়া সকাল থেকে শহরের কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এফএ/জেআইএম