ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন

নেই প্রচারণা, প্যাকিং সনদ ছাড়াই যাচ্ছে বরিশালের ইলিশ

শাওন খান | প্রকাশিত: ১০:০৮ এএম, ০৮ নভেম্বর ২০২৩

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে প্যাকিং সনদ ছাড়াই বরিশাল থেকে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে ইলিশ। ফলে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে অপরদিকে বন্ধ হচ্ছে না জাটকা পাচার। এ বিষয়ে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের প্রচারণা দরকার বলে মনে করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, ইলিশ বাজারজাতকরণে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের কাছ থেকে প্যাকিং সার্টিফিকেট নেওয়া বাধ্যতামূলক করে সরকার। কিন্তু সেসব নিয়মের তোয়াক্কা না করেই মাছ ব্যবসায়ীরা বরিশাল থেকে সরবরাহ করছে ইলিশ। ফলে সরকারি দপ্তরটি দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অলস পড়ে আছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ বাজারেও ইলিশ আনা-নেওয়ার জন্য পরিবহন প্রতি সরকারি এ দপ্তর থেকে সার্টিফিকেট নেওয়া দরকার। একইভাবে রপ্তানির ক্ষেত্রেও প্যাকিং সার্টিফিকেট ছাড়া মাছ পরিবহন সম্ভব নয়। তবে মাছ ব্যবসায়ীরা এ ব্যবস্থাপনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ২০০৯ সালে পোর্ট রোডে চলে যাওয়ার পর থেকে আজ অবধি পরিত্যক্ত হয়ে আছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি।

fishh-(4).jpg

বরিশাল নগরীর বান্দররোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্র (বিএফডিসি) ঘুরে দেখা যায়, সরকারের বৃহৎ এ পরিকল্পনার জন্য ১৯৮৬ সালে কীর্তনখোলা নদীর তীরে এক একর ২৩ শতাংশ জমির ওপর বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের অধীনে স্থাপন হয় কেন্দ্রটি। পুরো অবকাঠামো চালুর পর ২০০৭ সালে পূর্ণাঙ্গভাবে মৎস্য অবতরণ ও বাজারের কার্যক্রম চালু হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ইলিশ ব্যবসায়ীরা পোর্ট রোডে চলে গেলে বন্ধ হয়ে যায় বাজারটি। তবে বাজার বন্ধ থাকলেও এখনো বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন বরিশাল শাখা এখানেই অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনে কর্মরত দুজন বলেন, এখান থেকে মাছ প্যাকিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা হলে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের কর্মকর্তারা সেই প্যাকেট দেখে তারপর প্যাকিং সনদ দিতো। সনদে উল্লেখ থাকতো একটি ট্রাকে কত কার্টুন মাছ আছে, মাছের আকৃতি কেমন এবং কী কী মাছ আছে। এতে একস্থান থেকে অন্যস্থানে মাছ পরিবহনে সুবিধা হতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সহজে প্যাকিং সনদ দেখে বুঝতে পারতো কী পরিবহন হচ্ছে।

fishh-(4).jpg

এসব সনদ কেউ এখন মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন থেকে নিচ্ছে না জানিয়ে ওই দুই কর্মচারী বলেন, সরকার নির্ধারিতভাবে প্রতি ট্রাকের প্যাকিং সনদের অনুকূলে ৩০০ টাকা ফি দিতে হতো। এ সনদ ছাড়া কোনো মাছ এক বাজার থেকে আরেক বাজার, আবার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোরও রপ্তানি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন থেকে সনদ না নিয়ে কীভাবে তারা মাছ পরিবহন করে তা জানা নেই তাদের।

বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সেখান থেকে মাছ পরিবহনে কোনো যানবাহনেও প্যাকিং সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না। কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, প্যাকিং সার্টিফিকেট নিতে গেলে মাছের বর্ণনা দিতে হয়। তা দিতে অস্বীকৃতি অধিকাংশ আড়তদার ও ব্যবসায়ীর। যে কারণে নিয়ম জানলেও তারা এই সার্টিফিকেট নেন না।

fishh-(4).jpg

পোর্ট রোডের তারেক নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, প্যাকিং সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য আমাদের যেমন এগিয়ে যাওয়া উচিত তেমনি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনেরও এগিয়ে আসা উচিত। তারা যদি কোনো ট্রাক আটকে দিত বা ব্যবসায়ীদের তাগিদ দিত তাহলে আমরা বুঝতাম সার্টিফিকেটের দরকার আছে। তারা কিছুই করে না।

মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্রের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার মাসুদ শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, প্যাকিং সার্টিফিকেট নেওয়ার নিয়ম থাকলেও কোনো ব্যবসায়ীই নেন না। মাছ পরিবহনের ক্ষেত্রে তারা এই সার্টিফিকেট কোথায় পান বা আদৌ কোনো সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন কিনা তা জানা নেই। তবে আমি চেষ্টা করছি বরিশাল বিএফডিসিটি পুনরায় চালু করতে। বিএফডিসি চালু হলে সবকিছুই পর্যায়ক্রমে চলবে।

এসজে/এমএস