বগুড়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৬ মামলা, আসামি ৩১২
চলমান অবরোধের প্রথম দুইদিনে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, বিষ্ফোরণ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বগুড়ায় ছয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩১২ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুটি মামলায় বগুড়া সদরের লাহেড়িপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুলফিকার আবু নাসের এলায়েস আপেল (৪৮) ও রাশেদ রহমান (২৯) নামের এক যুবদল নেতাকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বগুড়া সদরের বাঘোপাড়ায় কুরিয়া সার্ভিসের ক্যাভার্ড ভ্যানে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সদর থানার এসআই বেদার উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যানবাহন ভাংচুর ও আগুন দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৬০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি রয়েছেন আরও অনেকে।
একইদিন বগুড়ার মাটিডালিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা হাত বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায়। এসময় সদর থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম আহত হন। এ ঘটনাতেও পুলিশ ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে। সদর থানার এসআই মিজানুর রহমান মিজান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
অপরদিকে, একইদিন বগুড়ার শাজাহানপুরের বনানীতে বিএনপির সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় যানবাহন ভাংচুর ও মোটরসাইকেলে আগুন দেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে শাজাহানপুর থানার এসআই রেজাউল করিম ও মাঝিড়া ইউনিয়নের সাবেক সদস্য তারেক সুমন বাদী হয়ে মামলা করেন। দুই মামলাতেই অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাংচুর ও বিষ্ফোরণের অভিযোগ এনে ৭১ জন করে মোট ১৪২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামি রয়েছে আরও অনেকে।
অবরোধের দ্বিতীয় দিন বগুড়া সদরের বাঘোপাড়াতে আবারও একটি ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এছাড়ার শহরের তিনমাথায় যানবাহন ভাংচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে বগুড়া সদর থানার এসআই জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ মামলা করেছেন। এখানেও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বগুড়ার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার স্নিগ্ধা আখতার বলেন, কাউকে হয়রানির জন্য মামলা করা হয়নি। জড়িতদের নাম উল্লেখ করেই মামলা হয়েছে। তদন্তের জন্য কারও নাম পরিচয় এখন প্রকাশ করা হচ্ছে না।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা বলেন, গায়েবি মামলা দিয়ে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা এ নিয়ে বিচলিত নয়।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, আটক চার যুবকের আচরণ সন্দেহজনক ছিল। তাদের পরিচয় এখনই প্রকাশ করা হচ্ছে না। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার (পুলিশ সুপার) মীর মনির হোসেন বলেন, হরতাল অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
এএইচ/জিকেএস