ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বাড়িতেই চালান হাসপাতাল

সর্বরোগের চিকিৎসা দেন এইচএসসি পাস সুদেব বিশ্বাস

আমিন ইসলাম জুয়েল | প্রকাশিত: ০৪:৫২ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

ছয় মাসের এলএমএএফপি প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন সর্বরোগের চিকিৎসক এইচএসসি পাস সুদেব বিশ্বাস। পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ীতে নিজ বাড়িতে ‘জনসেবা চিকিৎসালয়’ নামে একটি চেম্বার খুলেছেন। রোগী ভর্তি রাখার জন্য স্থাপন করেছেন কয়েকটি শয্যাও। কথিত পরীক্ষা নীরিক্ষা চালিয়ে তিনি প্রয়োজন মনে করলে রোগীদের ভর্তি করে ‘চিকিৎসা’ দেন সেখানে।

জানা গেছে, বেড়া উপজেলার নগরবাড়ীতে পুরাণভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে সুদেব বিশ্বাস নিজ বাড়িতে ‘জনসেবা চিকিৎসালয়’ নামে একটি মিনি হাসপাতাল খুলেছেন। নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ‘চিকিৎসা’ সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এতে সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন নগরবাড়ী এলাকা ও আশপাশের চরাঞ্চলের মানুষ।

সম্প্রতি জ্বর নিয়ে কোনো রোগী চেম্বারে এলে তিনি ডেঙ্গু রোগী বলে ভর্তি করে রাখেন তার হাসপাতালে। তার চেম্বারের ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির প্রচুর পরিমাণ ওষুধ ও কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম। রোগী ভর্তি রাখার জন্য রয়েছে পাঁচ-ছয়টি বেডও (শয্যা)। এসিরও ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। বেডে জায়গা না হলে অনেক রোগী মেঝেতে থাকেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুদেব রোগী প্রতি ভিজিট নেন ৩০০ টাকা। নিজেই প্রেসক্রিপশন করে নিজ ফার্মেসি থেকেই ওষুধ বিক্রি করেন। আবার তার মর্জি অনুযায়ী রোগীকে ভর্তি রাখেন নিজের মিনি হাসপাতালে। তার চেম্বারে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা প্রতিদিন ভিজিট করেন ওষুধ বিক্রি করে দেওয়ার জন্য। এজন্য তিনি মাসোয়ারাও পান।

সুদেব বিশ্বাসের চেম্বারে চিকিৎসা নিতে আসা ময়সার আলী বলেন, ‘আমি লোকমুখে শুনে চরকল্যাণপুর থেকে জ্বর নিয়ে এখানে ডাক্তার দেখাতে আইছি। ডাক্তার সাহেব নানা রকম পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে আমাকে বলেছেন, আমার ডেঙ্গু হয়েছে। তাই আমাকে ভর্তি করে স্যালাইন দিচ্ছে।’

নগরবাড়ি বসন্তপুরের বাসিন্দা আজগর আলী জানান, ভালো চিকিৎসকের অভাবে মানুষ বাধ্য হয়ে এই পল্লী চিকিৎসকের চিকিৎসা নেন। এখানে যেকোনো রোগী এলেই ডাক্তার স্যালাইন দিয়ে বেডে শুয়ে রাখেন। তার চেম্বারে প্রচুর রোগী আসেন।

সুদেব বিশ্বাস জানান, তিনি এইচএসসি পাস। তবে তিনি চিকিৎসক পরিচয় দেন। এন্টিবায়োটিকসহ সব ধরনের ওষুধ লেখেন। এমনকি ভিজিটিং কার্ডও করেছেন।

তার এসব কাজের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে জানান, অনেকেই এমন করে তাই তিনিও করেন।

তিনি বেডে রোগী ভর্তি রাখেন কোন আইনে? এ প্রশ্নে জানান, তিনি বেড করেছেন রোগীদের সুবিধার জন্য।

এ ব্যাপারে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতেমা তুজ জান্নাত বলেন, এল.এম.এ.এফ.পি কোনো ডিগ্রি নয়। এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারেন না। ওই পল্লী চিকিৎসকের বিষয়ে আমি শুনেছি।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন। ওই পল্লী চিকিৎসকের ব্যাপারে খাঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এফএ/এএসএম