‘আমার সময় বদলাইয়ে দেছে শেখ হাসিনা’
‘২০ বছর আগে বিধবা হইছি। কোনো ছেলে-পুলে নাই। হেনে হনে (এখানে সেখানে) ভিক্ষে করে দিন পার করিছি। সবসময় ভাবতাম আমার যদি একটা ঘর থাকতো! এখন আর আমার সেই দিন নাই। আমার সময় বদলাইয়ে দেছে শেখ হাসিনা। এখন আমার জমিসহ ঘর আছে। নিজের ঠিকানা আছে। জীবনে কখনো ভাবিনি নিজের পাকা ঘরে ঘুমাতে পারবো।’
শনিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে যশোর শহরের টাউন হল ময়দানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে এভাবে কথাগুলো বলেন সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের রায়মানিক গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মাকছুদা খাতুন (৫৫)।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, শিশুদের উন্নয়ন, বিভিন্ন পেশাজীবীর দক্ষতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে বর্তমান সরকার গৃহীত নানাবিধ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ উপকারভোগী জনসাধারণের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সদর উপজেলা প্রশাসন। এতে অংশ নেন সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, নারী ও শিশুদের উন্নয়নসহ সরকারে নানা প্রকল্পের উপকারভোগীরা।
অনুষ্ঠানে মাকছুদা খাতুন আরও বলেন, আমি আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুই ঘরের বাড়ি পাইছি। সেখানে আমি অনেক ভালো আছি। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকি। শুধু ঘরই না; বিধবা কার্ডও পাইছি। সেই কার্ড থেকে নিয়মিত ভাতাও পাই। আগে যেমন খেয়ে না খেয়ে থাকতাম; এখন তো খেয়ে-পরে বেঁচে আছি। আমার মতো বিধবা নিঃসন্তানকে শেখ হাসিনা দেখভাল করাতে আমি হাসিনার জন্যি দোয়া করি। উনি যেন হাজার বছর বেঁচে থাকেন।
চাঁচড়া ইউনিয়নের মাহিদিয়া গ্রামের আনোয়ার মুন্সী (৮১) নামে এক বৃদ্ধ বলেন, আমি আগে বয়স্ক ভাতা পাইনি। বর্তমানে শেখ হাসিনা আমাকে বয়স্ক ভাতা দিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে আমি আমার ওষুধ কেনা ও যা মনে চায় খাওয়ার ইচ্ছা পূরণ করছি।
চাঁচড়া এলাকার প্রতিবন্ধী রবিউল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধী ভাতা চালু করাতে আমি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছি। এই ভাতার টাকার দিয়ে আমি ছোট্ট চায়ের দোকান দিয়েছি। সেই চায়ের দোকান থেকে যা আয় হয় সেই টাকা দিয়ে পাঁচ জনের সংসার চালাচ্ছি। আমার এই সংগ্রামী জীবনে এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক নেত্রী। তিনি এমন এক পর্যায়ে আছেন বিশ্বের যেখানে গিয়েছেন সেই দেশের নেতারা শেখ হাসিনার মতামত নিয়েছেন, মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের সাফল্যের কারণে, তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই শেখ হাসিনাকে বিশ্বের নেতারা গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তিনি শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৪ বছরে দেশে প্রভূত উন্নয়ন করেছেন। তার সময়কালে দেশে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। তার কারণে আমরা বহুদিনের প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু পেয়েছি। এ কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এখন খুব সহজেই রাজধানীতে যেতে পারছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি এসেছে। যশোরে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। যার সুবিধাভোগী শুধু সদর উপজেলাবাসী নয়; সমগ্র জেলাসহ আশেপাশের কয়েকটি উপজেলাও।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, যশোর পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল প্রমুখ।
মিলন রহমান/এমআরআর/জেআইএম