আজীবন আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে যাব: জাহাঙ্গীর
গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করা হয়।
শনিবার (২১ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সই করা এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীর আলমকে ফের ক্ষমা করলো আওয়ামী লীগ
এদিকে, জাহাঙ্গীর আলমকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার খবর প্রকাশ হলে শনিবার বিকেল থেকে দলীয় নেতাকর্মীসহ তার অনুসারীরা মহানগরীর ছয়দানা এলাকার মেয়র ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন। গভীর রাত পর্যন্ত তারা জাহাঙ্গীরের বাসভবনের সামনে অবস্থান করেন।
পরে শনিবার রাতে নিজ বাসভবনের সামনে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি প্রাইমারিতে পড়া অবস্থায় আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ লালন করে আসছি। আজীবন আমি আওয়ামী লীগের জন্য কাজ কাজ করে যাব। সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করবো। আওয়ামী লীগ আমার অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। আমি সবাইকে নিয়ে গাজীপুরে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলবো।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে অনেক আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় দলীয় পদ-পদবি।
আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীর আলমের শিগগির দলে ফেরার গুঞ্জন
২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরকে দলে ফেরানো হয়।
গত মে মাসে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন জাহাঙ্গীর। সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। দলের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। একই সঙ্গে তার মা জায়েদা খাতুনের নামেও মনোনয়নপত্র কেনেন। তবে ঋণখেলাপির কারণে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও টিকে যায় তার মায়ের মনোনয়নপত্র।
আরও পড়ুন: এ বিজয় জনগণের: জাহাঙ্গীর আলম
প্রার্থিতা বাতিলের পর জাহাঙ্গীর আলমকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পক্ষে কাজ করতে বলা হয়। তিনি তা না করে ‘বিদ্রোহী’ হন। ওই সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও নানা হুঁশিয়ারি দেন। একপর্যায়ে তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। নিজের প্রার্থিতা ফিরে না পেলেও মা জায়েদা খাতুনকে নিয়ে লড়ে যান জাহাঙ্গীর। পরে তার মা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
মো. আমিনুল ইসলাম/এমআরআর/জেআইএম