বর্ণান্ধদের জন্য এবার স্কিন প্রটেক্টর আবিস্কার করলেন সাইফ উদ্দিন
কালার ব্লাইন্ড বা বর্ণান্ধদের জন্য এবার মোবাইল স্কিন প্রটেক্টর আবিস্কার করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফ উদ্দিন আহমেদ। যার মাধ্যমে ক্লালার ব্লাইন্ডরা মোবাইলের বিভিন্ন রঙ সহজেই চিহ্নিত করতে পারবেন। সহজেই মোবাইলের বিভিন্ন প্রোগ্রামের কাজ করতে পারবেন তারা। কালার ব্লাইন্ড হওয়ার কারণে তাদের যেসকল সমস্যার সম্মুখীত হতে হয় এই স্কিন প্রটেক্টর ব্যবহার করলে সেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
সাইফ উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা এলাকার বাসিন্দা। এর আগে গত বছর তিনি কালার ব্লাইন্ডদের জন্য একটি গ্লাস আবিস্কার করেছিলেন। যার নাম দিয়েছিলেন ‘ভাইব্রেন্ট’। ভাইব্রেন্ট গ্লাসের তৈরি চশমা দিয়ে কালার ব্লাইন্ডরা পৃথিবীকে রঙিনভাবে দেখতে পারবেন। তারা শনাক্ত করতে পারবেন বিভিন্ন রঙ। সেই গ্লাসটি বর্তমানে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও এই গ্লাসটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি বাংলাদেশে প্রথম কালার ব্লাইন্ডদের জন্য গ্লাস ডেভেলপ করেছি। সেই চিন্তা এসেছিল আমার স্বপ্নভঙ্গের কারণ থেকে। আমি পাইলট হতে চেয়েছিলাম। আমি যখন ফ্লাইংয়ে যাবো তখন জানতে পারি আমি কালার ব্লাইন্ড। তারপর থেকেই আমি এই বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করি। সেই গবেষণা থেকেই কালার ব্লাইন্ডদের জন্য গ্লাস ডেভেলপ করতে পেরেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমার এই গ্লাসটি অনেকের উপকারে এসেছে। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যার সমাধান হয়েছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও আমার এই ‘ভাইব্রেন্ট’ গ্লাসটি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর সেই সফলতার অনুপ্রেরণা থেকেই কালার ব্লাইন্ড মানুষের জীবনকে আরও সহজ করে তোলার জন্য মোবাইলের স্কিন প্রটেক্টর নিয়ে কাজ শুরু করি।
স্কিন প্রটেক্টর নিয়ে কাজ করার কারণ জানিয়ে সাইফ বলেন, স্কিন প্রটেক্টর নিয়ে কাজ করার কারণ হলো বর্তমানে আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছে মোবাইল। যেকোনো ভাবেই হোক অধিকাংশ সময়ই আমাদের মোবাইল ব্যবহার করতে হচ্ছে। শিক্ষা জীবনেও মোবাইল ব্যবহার করতে হয়। বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য অনেক রঙ নিয়ে কাজ করতে হয়। কিন্তু ক্লালার ব্লাইন্ডদের জন্য রঙ নিয়ে কাজ করাটা কষ্টের। তাদের কথা চিন্তা করেই স্কিন প্রটেক্টর নিয়ে কাজ করি। আমি সফলও হয়েছি।
বিশ্বের কোথাও স্কিন প্রটেক্টর আবিস্কার হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, এই স্কিন প্রটেক্টর এখন পর্যন্ত কেউ আবিস্কার করতে পারেনি। এই স্কিন প্রটেক্টর মোবাইলে ব্যবহার কররে কালার ব্লাইন্ডের জন্য অনেক কাজ সহজ হয়ে যাবে। এটা একটা নতুন আবিস্কার। যদি এই আবিস্কার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা যায় তাহলে আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের সুনাম অর্জন হবে। আমি আশা করি এই স্কিন প্রটেক্টর ইউরোপে ভালো চাহিদা পাবে। কারণ ইউরোপে পড়ালেখা শুরু করা হয় রঙ চেনার মাধ্যমে।
এ বিষয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সাইফ উদ্দিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব। সে কালার ব্লাইন্ডদের জন্য একটি স্কিন প্রটেক্টর আবিস্কার করেছে। সে নিজেও একজন কালার ব্লাইন্ড। যার কারণে সে নিজেই এই স্কিন প্রটেক্টর পরীক্ষা করতে পারছে। সে এটা ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছে। সেইসঙ্গে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা কালার ব্লাইন্ড আছে তারাও এই স্কিন প্রটেক্টর ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগে সে কালার ব্লাইন্ডদের জন্য গ্লাস আবিস্কার করেছিল। সেটাতেও সে সফল হয়েছে। তার সেই গ্লাস আবিস্কার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আলাপ আলোচনাও হয়েছে। সকলেই তাকে উৎসাহ দিয়েছে। যারা কালার ব্লাইন্ড তারা সেই গ্লাস ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছে। আমি সবসময় তার সফলতা কামনা করি।
এফএ/জেআইএম