ভোগান্তির অপর নাম খুলনার জিরোপয়েন্ট
অত্যন্ত ধীর গতিতে চলমান ড্রেন ও রাস্তার কাজ যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে খুলনার অন্যতম প্রবেশদ্বার জিরোপয়েন্টের বাসিন্দাদের। প্রতিদিন এই পথে নগরীতে প্রবেশ ও বের হচ্ছে কয়েক হাজার যানবাহন। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে এখানে একবার কেউ এলে নোংরা পানি আর কাদা গায়ে না লাগিয়ে ফিরতে পারছেন না।
এছাড়া যানজট যেন এখানে সবসময়ের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আর খানাখন্দে পড়ে ছোটখাটো যানবাহনের যাত্রীরা আহত হচ্ছেন অহরহ। সব মিলিয়ে জিরোপয়েন্ট যেন এখন এক মরণফাঁদ। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল জিরোপয়েন্ট এলাকায় রাস্তা ও ড্রেননির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, খুলনা। মাটি খোঁড়াখুঁড়ির ৩ মাস পার হলেও কাজের অগ্রগতি দেখাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স। নির্ধারিত সময় পর হলেও কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, এই জিরোপয়েন্ট হয়েই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যানবাহন ও মানুষ খুলনায় আসা-যাওয়া করে। কিন্তু জিরো পয়েন্টে নেমে তাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করায় জিরোপয়েন্ট এখন ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৮টি সড়কের সংযোগস্থল খুলনার এই জিরোপয়েন্ট। এখান থেকে গল্লামারি ময়ূর নদী পর্যন্ত ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কাজ করতে গিয়ে রাস্তার মাঝ বরাবর মাটি খুঁড়ে দুই পাশে রাখা হয়। ৬ মাস আগে খুঁড়ে এই ব্যস্ততম জিরোপয়েন্ট এলাকায় নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছিল। ব্যস্ততম সড়কটি খুঁড়ে রাখায় সবাইকে ঝুঁকি নিয়ে ড্রেনের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারদের।
মো. কাইউম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ব্যস্ততম বাণিজ্যিক জিরোপয়েন্ট মোড়ে ঈদের পর থেকে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খুবই খারাপ। ক্রেতাদের আনাগোনা একদম নেই। ৫ মাস পার হলেও ধীরগতিতে কাজ চলায় ভোগান্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, জিরোপয়েন্ট এলাকা খুবই ব্যস্ততম এলাকা। প্রশাসনসহ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি দেওয়া দরকার।
ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ বলেন, এমনিতেই ব্যবসা বাণিজ্য ভালো না, অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তারওপর এখন আবার ড্রেন-রাস্তার নির্মাণের ধীরগতির কারণে এ এলাকায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মাহবুব ব্রাদার্সের এক ইঞ্জিনিয়ার কবীর হোসেন বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজ করতে বিলম্ব হচ্ছে। বৃষ্টি কমে গেলে পুরোদমে কাজ চালানো হবে।
সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান খান মাসুদ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করার জন্য। তবে বৃষ্টির কারণে কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে বারবার। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা কাজ শেষ করতে পারবো।
এফএ/এমএস