ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নবগঙ্গা-মধুমতির ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা কয়েকশ পরিবার

জেলা প্রতিনিধি | নড়াইল | প্রকাশিত: ০৩:৩৬ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২৩

নড়াইলের কালিয়ার নবগঙ্গা ও লোহাগড়ার মধুমতি নদীতে আকস্মিক ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা কয়েকশ পরিবার। লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের পার আমডাঙ্গা ও লোহাগড়া ইউনিয়নের ছাগলছিড়া গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবারের ঘরবাড়ি মধুমতি নদীর কবলে বিলীন হয়ে গেছে। কালিয়া উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের
বিষ্ণুপুর পূর্ব পাড়ায় আকস্মিক নবগঙ্গা নদীর ভাঙনে একটি সরকারি রাস্তাসহ ১৫-২০ বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী শফিকুল ও শ্যামলী দম্পতি জানান, অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে একটি পাকা ঘর করেছিলাম সন্তানদের নিয়ে বসবাস করবো বলে। কিন্তু নবগঙ্গা নদী এক নিমেষে ধূলিসাৎ করে দিলো আমাদের স্বপ্ন। ভিটা-মাটিটুকু কেড়ে নিয়ে আমাদের পথে বসিয়ে দিলো। এখন সন্তানদের নিয়ে আমরা কোথায় যাবো।

আরেক ভুক্তভোগী আরিফ জানান, রাত ১০টার দিকে টিউবওয়েল দিয়ে ঘোলা পানি আর কাদা বের হচ্ছিল। রাত ১১টার দিকে হঠাৎ করে গাছপালা ও ঘরবাড়ি দেবে যাচ্ছিল। সরানোর কোনো সুযোগ আমরা পাইনি।

নবগঙ্গা-মধুমতীর ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা কয়েকশ পরিবার

জয়পুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘ তিন-চার বছর মধুমতি নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে আছেন তারা। জয়পুর ইউনিয়নের পার আমডাঙ্গা ও লোহাগড়া ইউনিয়নের ছাগলছিড়া গ্রামের প্রায় ৬০০ পরিবার নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে আছে। এই ভাঙন প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এর আগে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকার থেকে সাহায্য সহযোগিতা খুবই নগণ্য দেওয়া হয়। এ বছর কোনো সরকারি সাহায্য দেওয়া হয়নি। এ এলাকার বাসিন্দারা এখন সর্বস্বান্ত। তাদের মাথা গোজার ঠাঁইও নেই।

নবগঙ্গা-মধুমতীর ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা কয়েকশ পরিবার

আমডাঙ্গা গ্রামের আ. সবুর খান, নুর আলম মাস্টার, সোহাগ মাস্টারসহ কয়েকজন বলেন, আমাদের গ্রামের শতবর্ষের মসজিদ-মাদরাসা, কবরস্থানসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি ও কয়েকশ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে আমরা এখন পথে বসেছি। বর্তমান সংসদ সদস্য দুবছর আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু তা আর হয়নি। দ্রুত নদী ভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের
দাবি জানাচ্ছি।

নবগঙ্গা-মধুমতীর ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা কয়েকশ পরিবার

জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমন জাগো নিউজকে বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৮২ জনকে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীভাঙন রোধে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে আমরা কয়েকবার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি।

নবগঙ্গা-মধুমতীর ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা কয়েকশ পরিবার

নড়াইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন জাগো নিউজকে বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে নদীভাঙন রোধে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু সেটিও এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পুনরায় নদী ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।

এ বিষয়ে নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আসফাকুল হক চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, নদী ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

হাফিজুল নিলু/এসজে/জেআইএম