অনুদানের রোগা গরু না নিয়ে ফিরে গেলেন ১০৭ উপকারভোগী
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দাদের আর্থসামাজিক ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাড়ন্ত ষাঁড় বাছুর বিতরণের প্রকল্প নেওয়া হয়। তবে বিতরণের জন্য রোগা ও কঙ্কালসার গরু আনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তা গ্রহণ না করে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন ১০৭ জন উপকারভোগী।
তাদের অভিযোগ, উপজেলা ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শর্ত লঙ্ঘন করে একেবারে কঙ্কালসার গবাদিপশু বিতরণের জন্য এনেছে।
উপকারভোগী ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার ১০৭টি পরিবারকে একটি করে গরু বিতরণের কথা ছিল। এজন্য সকাল থেকেই উপকারভোগীরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ। তিনি বিতরণ শুরু করলে উপকারভোগীরা অনুদানের এমন রুগ্ন ও কঙ্কালসার গবাদিপশু না নেওয়ার কথা জানালে সংসদ সদস্য বিতরণ স্থগিত করে চলে যান।
উপকারভোগীরা জানান, তাদের প্রতিটি পরিবারকে সর্বনিম্ন ৭০ কেজি ওজনের বাড়ন্ত ষাঁড় দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০-৫৫ কেজি ওজনের বাছুর বিতরণের জন্য আনা হয়েছে। যার বেশিরভাগই অসুস্থ। সরকারি বরাদ্দের অর্ধেক দামেও কেনা হয়নি এসব গবাদিপশুগুলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশিগ্রাম ইউনিয়নের এক নারী উপকারভোগী জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গবাদিপশু লালনপালন বিষয়ক এক কর্মশালায় বলা হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা মূল্যের উন্নত জাতের ষাঁড় দেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের জন্য আনা হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের কম ওজনের রোগা ও কঙ্কালসার বাছুর।
তাড়াশ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়ালী-উল-ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী গবাদিপশুগুলোর ওজন কম থাকায় বিতরণ কার্যক্রম এমপির নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দরপত্রের শর্তপূরণ সাপেক্ষে উপকারভোগীদের মাঝে ষাঁড় বিতরণ করা হবে।
সরবরাহ করা গবাদিপশুর দাম জিজ্ঞাসা করলে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তুষার এন্টারপ্রাইজের ব্যাপারী বসন্ত জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারবো না। এ উপজেলায় ১০৭টি বাছুর সরবরাহ করতে বলেছে, এজন্য এনেছি।
মেসার্স তুষার এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো. জাকারিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, দরপত্রের শর্তপূরণ করেই ওই উপজেলায় ১০৭টি গবাদিপশু পাঠানো হয়েছে। তবে উপকারভোগীরা নাকি পশুগুলো নেয়নি।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, গবাদিপশুগুলো রুগ্ন ও কঙ্কালসার হওয়ায় উপকারভোগীরা নেয়নি। এজন্য বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে উপকারভোগীদের হাতে গবাদিপশু তুলে দেওয়া হবে।
এম এ মালেক/এমআরআর/জেআইএম