রাজশাহী আদালত
দেড় বছরেও উদ্ধার হয়নি ৬০১ মামলার নথি, বিচার কাজে প্রভাব
রাজশাহী আদালতের ৬০১ টি মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি হারানোর দেড় বছরেও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। গত বছরের ২৬ মার্চ মুহুরি হোসেন আলীর বাড়ি থেকে চুরি হয় এসব নথি। পুলিশর কাছে থেকে হারানোর মামলাটি হস্তান্তর হচ্ছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টে (সিআইডি)। এদিকে হারিয়ে যাওয়া নথি উদ্ধার না হওয়ায় প্রভাব পড়ছে বিচারিক কাজে।
অপরাধ বিজ্ঞানীরা বলছেন, অপরাধীদের সুবিধা দেবার পাশাপাশি বিচারিক কাজ বিলম্বিত করতে এমনটি করা হয়েছে কিনা তার অনুসন্ধান প্রয়োজন।
গত বছরের ২৪ মার্চ রাজশাহীর ৮টি থানার মাদক, মারধর ও চুরির ঘটনায় করা ৬০১টি মামলার নথি রাজশাহী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর রাষ্ট্রপক্ষের তিন সহকারী কৌঁসুলির কাছে বিচার কাজ পরিচালনার সরবরাহ করে পুলিশ। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সব নথি মুহুরি হোসেন আলীর কাছে রাখতে দেন। কিন্তু বিপত্তি ঘটে সেখানেই। ২৬ মার্চ মহুরির বাড়িতে চুরি হয় নথিগুলো।
চুরি হওয়া নথিগুলোর মধ্যে আছে মোহনপুর থানার ৭০টি, বাঘার ৪২টি, দুর্গাপুরের ৬০টি, বাগমারার ৮১টি, পুঠিয়ার ৭২টি, তানোরের ১১২টি, চারঘাটের ৮৩ টি ও গোদাগাড়ী থানার ৮১টি। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়া ১৮১টি মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিও আছে। নথি চুরির পর গত বছরের ২৬ মার্চ নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি চুরি মামলা করেন হোসেন আলী। কিন্তু নথি হারানোর দেড় বছর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর কোনো কুল কিনারা করতে না পারাটা উদ্বেগের বিষয় বলছেন আইনজীবীরা। তবে পুলিশ বলছে, মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় সিআইডিতে নেওয়া হচ্ছে।
রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জমশেদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, চুরি যাওয়া নথিগুলো উদ্ধার করার কথা পুলিশের। তবে এটি কেন হলো না সেটি জানা নেই। এগুলো নিয়ে তদন্ত কমিটিও হয়েছে। তবে এটি আমাদের বিচার কাজে প্রভাব ফেলছে। বিচার প্রার্থীদের বিলম্বের মধ্যে ফেলার জন্যও করা হতে পারে। তবে আমরা চাই এটি দ্রুত নিষ্পত্তি হোক।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মামলাটি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সিআইডিতে পাঠানো হচ্ছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। শিগগির সিআইডির কাছে মামলার সব কিছু পাঠানো হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণা বাণিক জাগো নিউজকে বলেন, এ মামলার নথিগুলো হারানো আমাদের বিচার ব্যবস্থার জন্য একটি খারাপ খবর। এগুলো উদ্ধারের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এটি উদ্ধার না হওয়াটা একটা ব্যর্থতা। এগুলো আমাদের বিচার ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, নথি হারানোর ঘটনায় অপরাধীদের সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি বিচারিক কাজ বিলম্বিত করতে এমনটি হয়েছে কি না তার অনুসন্ধান প্রয়োজন।
সাখাওয়াত হোসেন/এসজে/এমএস