ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মানসিক ভারসাম্যহীন মা গেলেন গাজীপুর, যমজ সন্তান খুলনায়

জেলা প্রতিনিধি | যশোর | প্রকাশিত: ০২:০৯ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

যশোরে যমজ সন্তানের জন্ম দেওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গাজীপুরে পাঠানো হয়েছে। আর দুই নবজাতককে খুলনার ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে আলাদা দুটি অ্যাম্বুলেন্সে তাদের সরকারি দুই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নির্দেশে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা মোছা. মাহিনুর গেলেন গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে। আর যমজ দুই শিশু মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশা গেলো খুলনার ছোটমণি নিবাসে।

আরও পড়ুন: সেই যমজ শিশু যাচ্ছে ছোটমণি নিবাসে, মায়ের ঠাঁই হবে আশ্রয়কেন্দ্রে

হাসপাতাল থেকে মা মোছা. মাহিনুর ও দুই শিশু মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশাকে বিদায় জানান যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায়, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইয়াকুব আলী মোল্লা, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়ের সমাজসেবা কর্মকর্তা রুবেল হাওলাদার।

মা মোছা. মাহিনুরকে নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকতা মুনা আফরিণ এবং শিশু মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশাকে নিয়ে খুলনার ছোটমণি নিবাসের উদ্দেশে যাত্রা করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের চাইল্ড প্রটেকশন কর্মকর্তা খালেদা আক্তার।

যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায় বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা বাঘারপাড়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারী যমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে হাসপাতালে তাদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করে মাকে গাজীপুরে আশ্রয়কেন্দ্রে আর দুই সন্তানকে খুলনার ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: পাগলিটা মা হলেও দায় নিলো না কেউ

যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও তার দুই সন্তানকে পাওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসা ও দেখাশোনার ব্যবস্থা করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশনায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা ও দুই সন্তানকে দুটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। রাষ্ট্র তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে।

যশোর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ বলেন, মা ও দুই নবজাতক হাসপাতালে আসার পর আমরা সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দিয়েছি এবং দেখাশোনা করেছি। মা ও দুই সন্তানকে এখন সরকারি দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।

জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকতা মুনা আফরিণ বলেন, মা মাহিনুরকে নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছি। সেখানে তাকে হস্তান্তর করে ফিরবো।

৩ সেপ্টেম্বরর মা ও দুই নবজাতক যশোর হাসপাতালে আসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অফিস, আনসার সদস্য, এনজিও কর্মীদের সঙ্গে তিনি ১৮ দিন তাদের দেখভাল করেছেন। শিশু দুটির নাম রাখা হয়েছে মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশা।

৩ সেপ্টেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের বিছালির (খড়) ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী জমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। এরপর থেকে মা ও দুই নবজাতক যশোর শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

হাসপাতালে ভর্তির সময় ওই নারীর পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরবর্তীতে পিবিআই ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। জানা যায়, ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ মাহিনুর। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে। পিবিআইে মাহিনুরের মা ও ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা মাহিনুর ও তার সন্তানদের নিতে রাজি হননি।

মিলন রহমান/এসজে/এএসএম